২ জঙ্গিকে ধরিয়ে দিলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার
২০ নভেম্বর ২০২২ ১৭:০১
ঢাকা: আদালত থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি সদস্যকে ধরিয়ে দিলে ১০ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের গণমাধ্যম শাখার এআইজি মনজুর হোসেন সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের সামনে থেকে পালিয়ে যান মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি। পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য।
তারা হলেন— আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব এবং মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান।
ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ওই সময় ডিবি প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। দুটি মোটরসাইকেলে ৬ জন এসে স্প্রে করে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তারা পুলিশের গায়েও হাত তুলেছে। স্প্রে করার কারণে পুলিশ সদস্যরা চোখে দেখতে পায়নি। মোটরসাইকেলে করে আসামিদের নিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।’
হারুন অর রশিদ বলেন, ‘পুলিশ প্রতিটি জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়েছে তল্লাশি করছে। আমরা সিটি ক্যামেরা পর্যালোচনা করছি।’
আদালত সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধ আইনের এক মামলায় আজ শুনানির দিন ধার্য ছিল। আসামির সংখ্যা ২০ জন। এদের মধ্যে দুই আসামি জামিনে, বাকি আসামিরা আদালতে হাজির হন। এদিন ২০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান। এরপর আসামিদের আদালত থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মেইন গেইটে এলে হঠাৎ করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত পুলিশের চোখে স্প্রে নিক্ষেপ করে দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশকে মারধরও করে তারা। এদের মধ্যে পুলিশ সদস্য নুরে আজাদ আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীর ড্রাইভার শিপলু বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল ৮টার দিকে স্যারকে (আইনজীবী) উত্তরা থেকে নিয়ে আসি। এরপর আর কোনো কাজ থাকে না। আদালতের সামনেই বসেছিলাম। হঠাৎ দেখি হট্টগোল। দেখি কয়েকজন পুলিশের দিকে স্প্রে মারছে। হাতকড়া পরা চার আসামিকে তারা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আহত হয়েও দুইজনকে আটকও করে পুলিশ। তবে অপর দুইজনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা।’
পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিরা জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত।
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন প্রকাশক দীপন। এ মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন— বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার রায়ে আসামিদের সবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। আসামিদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক। বাকিরা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন।
সারাবাংলা/একে