Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেজর জিয়ার পরিকল্পনাতেই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ছক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ নভেম্বর ২০২২ ১০:৪০

ঢাকা: নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে বড় ভাই ওরফে সাগর ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) নির্দেশনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। সেই অনুযায়ী ঢাকার আদালত থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতার হওয়া অন্য দুই জঙ্গি মো. আরাফাত রহমান (২৪) ও মো. আ. সবুর ওরফে রাজ ওরফে সাদ ওরফে সুজন (২১) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ কমিশনার (ডিসি মিডিয়া) ফারুক হোসেন সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টায় ২০১২ সালে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন মেজর জিয়া। এই অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত থাকায় দুই সেনা কর্মকর্তা গ্রেফতার হলেও পালিয়ে যান জিয়া। এরপর তিনি যুক্ত হন জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে। বহিষ্কৃত জিয়ার পরিকল্পনা ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ঘটে একের পর এক হত্যাকাণ্ড। আনসার আল ইসলামের বেশিরভাগ নেতাকর্মী গ্রেফতার হলেও এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে তিনি। এরইমধ্যে কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ হয়েছে।

ফারুক হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পলাতক ও অজ্ঞাত আসামিদের গ্রেফতারে রাজধানীসহ দেশজুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে।’

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আয়মান ওরফে মশিউর রহমান (৩৭), সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক (২৪), তানভীর ওরফে সামশেদ মিয়া ওরফে সাইফুল ওরফে তুষার বিশ্বাস (২৬), রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ ওরফে সুমন (২৬) ও মো. ওমর ফারুক ওরফে নোমান ওরফে আলী ওরফে সাদ (২৮) পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে।

বিজ্ঞাপন

আদালত থেকে পালিয়ে গেল দীপন হত্যায় জড়িত ২ জঙ্গি

পরিকল্পনার বাস্তবায়নে দু’টি মোটরসাইকেলযোগে আনসার আল ইসলামের অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন সদস্য অবস্থান নেয়। এছাড়া আশপাশে অবস্থান করা অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য আদালতের মূল ফটকের সামনে ছিল। এরপর তারা পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

মামলা এজাহারে আরও বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে কাশিমপুর থেকে ১২ জন আসামিকে ঢাকার আদালতে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে আসা হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার প্রসিকিউশন বিভাগে আসামিদের হাজিরা দেওয়ার জন্য সিজেএম আদালত ভবনের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইবুনাল ৮-এ নিয়ে যাওয়া হয়।

এই গেটের সামনে থেকেই পালিয়ে যায় দুই জঙ্গি। ছবি: আরিফুল ইসলাম

মামলার শুনানি শেষে জামিনে থাকা ১৩ নম্বর আসামি মো. ঈদী আমিন (২৭) ও ১৪ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি (২৪) আদালত থেকে বের হয়ে যান। এরপর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে আদালতের মূল ফটকের সামনে পৌঁছানো মাত্র আগে থেকেই দু’টি মোটরসাইকেলযোগে অজ্ঞাতনামা আনসার আল ইসলামের ৫/৬ জন সদস্য, আদালতের আশপাশে অবস্থানরত আনসার আল ইসলামের আরও ১০/১২ জন সদস্য হামলা করে। তারা কনস্টেবল আজাদের হেফাজতে থাকা আসামি মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান (২৪), মো. আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪) মো. আরাফাত রহমান (২৪) ও মো. আ. সবুর ওরফে রাজু ওরফে সাদ ওরফে সুজনকে (২১) ছিনিয়ে নিতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে।

কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা দিলে আসামিদের মধ্যে কোনো একজন তার হাতে থাকা লোহা কাটার যন্ত্র দিয়ে কনস্টেবল আজাদের মুখে আঘাত করে।

এ ঘটনার পর পুলিশ সদর দফতর থেকে দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ঢাকাসহ সারাদেশে রেড এলার্ট জারি করে অভিযান চালানো হচ্ছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

মেজর জিয়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর