Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুখোশে ঢাকা মুখ, পায়ে বাঁধা কালো সুতায় ধরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ নভেম্বর ২০২২ ১৬:২০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রায় একমাস আগে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় এক প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় এক সোনা ব্যবসায়ীসহ আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতার বাকি সাতজনের মধ্যে ডাকাত সর্দার সাইফুল ও তার বাহিনীর সদস্যরা আছে। সিসি ক্যামেরায় ডাকাতদলের এক সদস্যের পায়ে বাঁধা কালো সুতার সূত্র ধরে এদের শনাক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের চান্দগাঁও ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার সাতজন হলেন- মো. মুসা (৩০), সাইদুল ইসলাম সাইফুল (৩০), খোরশেদুল আলম (২৮), সাজ্জাদ হোসেন (২৭), মো. বাপ্পী (২৬), সজল শীল (২৭) ও মো. ইদ্রিস ওরফে কাজল (৩৪) এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিপ্লব চন্দ্র সাহা (৩৯)।

গত ২৮ অক্টেবার রাতে রাউজান উপজেলার সুলতান পাড়ার বাসিন্দা প্রবাসী সরোয়ার চৌধুরীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মুখোশ পড়া ডাকাতদল বাড়িতে থাকা সরোয়ারের বৃদ্ধ বাবাকে বেঁধে বিভিন্ন ধরনের ১২৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, সোনার বার, নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় রাউজান থানায় একটি মামলা দায়ের হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ জানান, ওই মামলার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে তারা জানতে পারেন, গত ২৭ অক্টোবর দুবাই প্রবাসী সরোয়ার তার মামাত বোনের বিয়ের জন্য দেশে আসেন। দুবাই থেকে আনা কিছু স্বর্ণালংকার শুল্ক পরিশোধের মাধ্যমে তিনি বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন বাড়িতে তার বাবাকে রেখে অন্য সদস্যরা বিয়েতে যায়। ওই রাতেই ডাকাত দল গ্রিল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করে।

‘আমার প্রথমে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করি। কিন্তু সবার মুখে মুখোশ থাকায় কারও চেহারা বোঝার উপায় ছিল না। দেখা যায়, ২৮ তারিখ গভীর রাতে ওই বাসার ফ্রিজ খুলে খাবার খাচ্ছে এক যুবক। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আরো এক যুবক সেখানে আসে এবং ফ্রিজ থেকে খাবার খায়। সেই যুবকের পায়ে কালো সুতা দেখা যায়। ফুটেজে তাকে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। সেই যুবককে আমরা প্রথমে শনাক্ত করি, সে ডাকাত সর্দার সাইফুল।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘যদিও সাইফুলকে প্রথমে শনাক্ত করা হয়েছে, কিন্তু এর সূত্রে রাউজানের গহিরা থেকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় মুছাকে। এরপর তার দেওয়া তথ্যে সাইফুল ও অন্যদের গ্রেফতার করা হয়। চোরাই স্বর্ণ কেনার অপরাধে বিপ্লবকে গ্রেফতার করি। তাদের কাছ থেকে ৪৬ ভরি স্বর্ণ, নগদ ২৩ লাখ দুই হাজার ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়।’

র‌্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ আরও জানান, সাইফুলের প্রস্তাবে এক লাখ টাকার বিনিময়ে সরোয়ারের প্রতিবেশি কাজল ওই বাড়িতে ডাকাতির ছক আঁটে। কাজল ও সাইফুলের ধারণা ছিল, বাড়িতে কেউ থাকবে না। তবে সরোয়ারের বাবাকে দেখে তাকে কম্বল মুড়িয়ে পা বেঁধে গলায় ছুরি ধরে রাখে। তার থেকে চাবি নিয়ে ও কিছু আলমারি কেটে ১২৮ ভরি সোনা, পাঁচটি মোবাইল ফোন সেটসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে যায়।

কাজলের দেওয়া তথ্যে ডাকাতির জন্য ঘরে ঢুকেছিল মূলত সাতজন। এদের মধ্যে ছয়জন গ্রেফতার হয়েছে। এমরান নামে একজন এখনও পলাতক আছে।

র‌্যাবের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, সরোয়ারের ঘর থেকে লুট করা মালামাল সাইফুল নিজের কাছে রেখে দেয়। মুছাকে নিয়ে সেগুলো বিক্রির জন্য যায় বিপ্লবের কাছে। বিপ্লব ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা দরে ২৯ লাখ টাকা দিয়ে কিছু স্বর্ণালঙ্কার ও বার কিনে। সেই টাকা থেকে সাইফুল প্রতিশ্রুতিমতো কাজলকে এক লাখ টাকা দেয়। মুছা ও সে ১৬ লাখ টাকা নিয়ে বাকী টাকাগুলো অন্যদের ভাগাভাগি করে দেয়।

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

গ্রেফতার ডাকাতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর