খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন স্থগিত
২২ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৪০
ঢাকা: ঘুষ লেনদেনের মামলায় আট বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই জামিন স্থগিত থাকবে। ওই দিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
গত ১৭ নভেম্বর খন্দকার এনামুল বাছিরকে জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. রইস উদ্দিনের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ওই দিন আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে, ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ খন্দকার এনামুল বাছিরকে জামিন দিলেও পরদিন তা প্রত্যাহার করেন নেন।
তারও আগে ১৩ এপ্রিল তার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৮০ লাখ টাকা জরিমানা স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।
বর্তমানে এনামুল বাছিরের আপিল বিচারাধীন রয়েছে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম দুদকের বরখাস্তকৃত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে আট বছর ও পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এ ছাড়া বাছিরকে ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এর মধ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ও বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫(এ) ধারায় তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপরদিকে অর্থ পাচার আইনের চার ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাছিরের দুটি দণ্ড একসঙ্গে চলবে বলে তাকে পাঁচ বছর দণ্ড ভোগ করতে হবে।
তবে দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় উভয়ে দোষী সাব্যস্ত হলেও একই ধরনের অভিযোগে দণ্ডিত হওয়ায় এ ধারায় কাউকেই সাজা দেওয়া হয়নি।
এরপর খন্দকার এনামুল বাছির বিচারিক আদালতের দেওয়া আট বছরের সাজা থেকে খালাস চেয়ে আপিল আবেদন করেছেন। পাশাপাশি জামিন আবেদন করেন।
গত ৬ এপ্রিল বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এনামুল বাছির এই আপিল দায়ের করেন।
৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদকের পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান।
ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজান এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।
এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে দুদক। পরে ২০১৯ সালের ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে। অন্যদিকে দুর্নীতির মামলায় ডিআইজি মিজানকে গ্রেফতার করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ