Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সেই সুইমিং পুল এলাকায় মেয়রের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতারা


২৯ এপ্রিল ২০১৮ ২১:৩২

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর আউটার স্টেডিয়ামে নির্মাণাধীন সুইমিং পুল এলাকায় গিয়ে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেছেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। যদিও খেলার মাঠে সুইমিং পুল নির্মাণের বিরোধিতায় সরব ছিলেন এই দুই ছাত্রলীগ নেতা।

এ ছাড়া গত বছর সুইমিং পুলবিরোধী একটি কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

রোববার (২৯ এপ্রিল) সকালে সেই সুইমিং পুল এলাকায় গিয়ে মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের পক্ষে-বিপক্ষে ফেসবুকে সরব হয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

ইমরান আহমেদ ইমু সারাবাংলাকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার জাকারিয়া দস্তগীর মেয়র সাহেবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সম্মেলনে যাবার বিষয়েও আমরা কথা বলেছি। মেয়র সাহেব আমাদের সিজেকেএস অফিসে দেখা করতে বলেছিলেন। আমরা স্টেডিয়াম এলাকায় সিজেকেএস অফিসে গিয়ে জানতে পারি, তিনি সুইমিং পুল এলাকায় গেছেন। আমরা অপেক্ষা করতে থাকি।

তিনি বলেন, এ সময় রায়হান ভাই (মেয়রের এপিএস) দস্তগীরকে ফোন করে সুইমিং পুল এলাকায় যেতে বলেন। সুইমিং পুল এলাকা থেকে আমাদের দেখে মেয়র সাহেব ইশারায় আমাদের সেখানে যেতে বলেন। পরে আমরা দুজন সেখানে গিয়ে উনার সঙ্গে দেখা করি।

চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন আউটার স্টেডিয়ামের ৭০ হাজার ৩৮০ বর্গফুট জায়গায় ১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে সুইমিং পুল নির্মাণ করা হচ্ছে চট্টগ্রামে জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেএকএস) তত্ত্বাবধানে, যার সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

২০১৭ সালে সুইমিং পুল নির্মাণের কাজ শুরুর পর এর বিরোধিতা করেছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। প্রয়াত এই নেতার অনুসারী হিসেবে সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বাধীন মহানগর ছাত্রলীগ সুইমিং পুল নির্মাণের বিরুদ্ধে কর্মসূচি দিয়েছিলেন। সে সময় ছাত্রলীগের এই কর্মসূচিকে মেয়র বিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করেছিলেন আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারীরা।

সম্প্রতি ভিন্ন বিতর্কের মুখে সংগঠনের পদ থেকে রনি অব্যাহতি নেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এক নম্বর যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, যিনি প্রয়াত মহিউদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর জাকারিয়া দস্তগীর প্রথমবার মেয়রের মুখোমুখী হয়েছেন।

মেয়রের সঙ্গে সুইমিং পুল এলাকা পরিদর্শনের ভঙ্গিতে দুই ছাত্রলীগ নেতার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর কেউ কেউ এর বিরোধিতা করছেন। তারা বলছেন, যে ছাত্রলীগ সুইমিং পুল নির্মাণের বিরোধিতা করেছে, সেখানে গিয়ে মেয়রের সঙ্গে দেখা করা নীতিবর্হিভূত কাজ হয়েছে। এতে সংগঠনে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে।

আরেকটি অংশ বলছেন, ছাত্রলীগে মহিউদ্দিনের অনুসারীদের মধ্যে ভাঙ্গন ধরানোর কৌশল হিসেবে দুই নেতাকে সুইমিং পুল এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

মহিউদ্দিনের অনুসারী দস্তগীরের ঘনিষ্ঠরা এই দেখা করাকে স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন। তাদের মতে, মেয়র যেখানে দেখা করতে বলেছেন, সেখানেই দুই নেতা গেছেন। এতে অন্যায় হয়নি।

তবে যে ছাত্রলীগ নেতারা একদিন সুইমিং পুলের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, তারা সেখানে গিয়ে মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাতে বাধ্য হয়েছেন, এমনটা ভেবে উৎফুল্ল মেয়রের অনুসারীরা।

বিজ্ঞাপন

জাকারিয়া দস্তগীর সারাবাংলাকে বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেছি। এরপর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন সাহেবের সঙ্গেও দেখা করেছি। এটা একেবারে স্বাভাবিক বিষয়। এটাকে ফেসবুকে সমালোচনার হাতিয়ার করা ঠিক নয়।

ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, আমরা খেলার মাঠে সুইমিং পুল বানানোর বিরুদ্ধে এটাও যেমন সত্য, আবার স্বাভাবিক রাজনৈতিক শিষ্টাচার এবং সৌজন্যতাবোধের অংশ হিসেবে মেয়রের সঙ্গে সেখানে গিয়ে সাক্ষাত করেছি, এটাও সত্য। আমরা তো স্বেচ্ছায় সেখানে যাইনি। মেয়র সাহেব আমাদের সেখানে ডেকেছেন বলে গিয়েছি। ফেসবুকে অনেক সময় তিলকে তাল করে ফেলা হয়।

২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল সুইমিং পুল প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশের পর সেখানে ভাংচুর ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এসময় ১৪ জন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন এবং বেশি কিছু গাড়ি ও দোকান ভাংচুর করা হয়। পরে পুলিশ শটগানের গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সুইমিংপুল প্রকল্প এলাকায় ভাংচুরের ঘটনায় সিজেকেএস’র ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম স্বপন ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এসআই মহিউদ্দিন রতন বাদী কোতোয়ালি থানায় মামলা দুটি দায়ের করেছিলেন। দুই মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। ইমরান আহমেদ ইমু, নুরুল আজিম রনি এবং জাকারিয়া দস্তগীর ‍দুই মামলাতেই আসামি হিসেবে আছেন।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর