মির্জাপুরে বংশাই-লৌহজং নদীতে ব্যাপক ভাঙন
২৩ নভেম্বর ২০২২ ১৬:০৮
টাঙ্গাইল: যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি কমতে থাকায় টাঙ্গাইলের অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে প্রভাব পড়ছে। পানি কমার কারণে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বংশাই-লৌহজং নদীতীরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে নদী ভাঙনের ফলে ফতেপুর বাজার সংলগ্ন এলজিইডির পাকা রাস্তা বিলীন হয়ে গেছে। অসময়ে নদী ভাঙনে মির্জাপুর উপজেলার সঙ্গে বাসাইল উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বংশাই ও লৌহজং নদীর মির্জাপুর উপজেলা অংশের ভাঙন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তারা অভিযোগ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দফতরের দ্বারে-দ্বারে ঘুরছেন।
ফতেপুর এলাকার বাসিন্দা তসলিম খান, তাহের উদ্দিন ও কৃষক মনির হোসেন জানান, ফতেহপুর ইউনিয়নে প্রতিবছরই বংশাই নদীতীরে দুইবার ভাঙন দেখা দেয়। পানি বাড়ার সময় ও পানি কমার সময় এই দুই বার নদীর তীর ভাঙতে থাকে। এ বছর পানি কমার সময় ভাঙনের মাত্রা ব্যাপক আকার ধারণ করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী আরও জানান, বংশাই নদীর ভাঙনের ফলে ফতেপুর, থলপাড়া, বৈল্যানপুর, হিলড়া আদাবাড়ি বাজার, গোড়াইল, গাড়াইল, পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া, বাওয়ার কুমারজানি, ত্রিমোহন, বান্দরমারা, যুগিরকোপা, রশিদ দেওহাটা চাকলেশ্বরসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লৌহজং নদীতীরেও একই অবস্থা দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙনে তাদের লাখ লাখ টাকার ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শুকনো মৌসুম হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তারা কোনো সহায়তা পাননি।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানায়, নদী ভাঙনে তাদের লাখ লাখ টাকার ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শুকনো মৌসুম হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তারা কোনো অনুকম্পা বা সহায়তা পাননি।
লৌহজং নদীর পানি কমতে থাকায় মাঝালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বরাটি, পুষ্টকামুরী, দেওহাটা, কোর্ট বহুরিয়া, বহুরিয়া, কামারপাড়া, নাগরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার পরিবারগুলো নদীতীর ভাঙনের ফলে দিশেহারা হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু অসময়ে নদী ভাঙনের কথা কেউ আমলে নিচ্ছে না।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, বংশাই ও লৌহজং নদীতে পানি কমতে থাকায় কোন কোন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক পর্যায়ে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ব্লক ফেলে স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রাক্কালন পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ জানান, অসময়ে নদী ভাঙনে গাড়াইল, পুষ্টকামুরী উত্তরপাড়া, বাওয়ার কুমারজানিসহ বেশ কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তিনি ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের প্ররেয়াজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
সারাবাংলা/এনইউ