Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বিএনপি মানুষকে রক্ত আর হত্যা ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ নভেম্বর ২০২২ ২৩:১২

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দেশের মানুষকে রক্ত আর হত্যা ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। তারা লুটপাট করেছে, অর্থ পাচার করেছে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, মানুষের মুখের গ্রাস নিয়ে নিজের উদরপূর্তি করেছে। তারা জনগণকে কিছুই দিতে পারে না। তারা শুধু মানুষের রক্ত চুষে খেতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে যশোর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতায় থাকা সামরিক সরকারের অত্যাচার নির‌্যাতনের সমালোচনা করে বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিচার চাওয়ার অধিকার আমার ছিল না। বাবা-মা, ভাই হারিয়েছি। মামলা করতে পারব না। বিচার করতে পারব না। তারপরেও সবকিছু মাথায় নিয়ে ফিরে এসেছি বাংলার জনগণের কাছে। একটাই কারণ, এই জাতির জন্য আমার বাবা সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। কাজেই আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা ভোট দিয়েছেন। আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বার বার ক্ষমতায় এসেছি। ক্ষমতায় এসেছি বলেই আজ দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। যে দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করা হয়েছিল, বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে মানুষকে পরানো হতো, মানুষের পেটে খাবার ছিল না, মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না, রোগে চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিয়া যখন মারা যায় তখন নাকি ভাঙা স্যুটকেস ও ছেড়া গেঞ্জি ছাড়া কিচ্ছু রেখে যায় নাই। কিন্তু সেই ছেঁড়া গেঞ্জি হয়ে গেল ফ্রেঞ্চ শিফন আর ভাঙা বাক্স হয়ে গেল জাদুর বাক্স। যা দিয়ে ওই কোকো-তারেক হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। দেশের টাকা বিদেশ পাচার করেছে। আর পাচার করেছে বলেই তারা শাস্তি পেয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়া। বাংলাদেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। সেই মানি লন্ডারিং মামলায় সাত বছরের জেল ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অস্ত্র চোরাকারবারি করতে গিয়ে তারেক জিয়া ধরা খেয়েছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও তার সাজা হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকেসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করতে চেয়েছিল। বারবার এই ধরনের মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। সেই মামলায় সে সাজাপ্রাপ্ত যাবজ্জীবন। খালেদা জিয়া শুধু জনগণের অর্থ নয়, এতিমের অর্থও মেরে দিয়েছে।’

বাংলাদেশ যেন পৃথিবীর বুকে সম্মান নিয়ে চলতে পারে- আজকের বাংলাদেশকে সেভাবেই উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে ঘোষণা দিয়েছিলাম রূপকল্প-২০২১। এর মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত করব। আজকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করেছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ।’

তিনি বলেন, ‘এই যশোর সবসময় গুরুত্বপূর্ণ একটা জেলা। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যশোরের অবস্থান আমরা কোনোদিন ভুলতে পারি না। অথচ এই যশোরের উন্নয়নে তারা তো কিছু করেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমরা এই যশোরের উন্নয়ন করেছি। আওয়ামী লীগ যখন থেকে ক্ষমতায় এসেছে তখন থেকে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে দ্রুত ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে- এ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারপ্রধান বলেন, ‘অনেকে আমাদের রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে। রিজার্ভ কোথাও যায়নি। মানুষের কাজে লেগেছে। যেহেতু যুদ্ধ লেগেছে, স্যাংশন; তাই দুইশ’ ডলারের গম ছয়শ’ ডলারের কিনতে হচ্ছে। তারপরও আমরা কিনে আনছি দেশের মানুষের জন্য। আমার দেশে যেন কোনো খাদ্য ঘাটতি দেখা না দেয়।’

এ সময় দেশের মানুষকে এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি ফেলে না রেখে উৎপাদন করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বলে ব্যাংকে টাকা নাই। কেউ কেউ ব্যাংক থেকে টাকা তোলে। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে রাখলে তো চোরে নিয়ে যাবে। চোরের জন্য সুযোগ করে দেওয়া। কিন্তু ব্যাংকে টাকা নেই এ কথা মিথ্যা। গতকালও আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরসহ ওদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমাদের এ বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই। প্রত্যেকটা ব্যাংকে যথেষ্ট টাকা আছে। আমাদের রেমিট্যান্স আসছে, বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আসছে। আমদানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। রফতানি আয়ও বেড়েছে। আমাদের ট্যাক্স কালেকশন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে, বাংলাদেশ সেখানে যথেষ্ট শক্তিশালী আছে।’

যশোর খেজুর গুড়ের দেশ আবার ফুল উৎপাদনেও যশোর এক নাম্বারে আছে বলেও জানান তিনি। টানা মেয়াদে সরকারে থেকে দেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত খাতে দৃশ্যমান উন্নয়ন অঙ্গীকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জয়গান নিয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনসভায় ভাষণ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এর মধ্য দিয়ে একদিকে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন; অন্যদিকে, করোনাকালের ঘরবন্দির ঘেরাটোপ থেকে জনতার কাতারে সরকার ও দলের বার্তা পৌঁছে দিতে ভোটের মাঠে নামলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, পীযূষ ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, কাজী নাবিল আহমেদ এমপি প্রমুখ।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে যশোর বিমানবাহিনী একাডেমিতে ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমির রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ (শীতকালীন) ২০২২’ অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পাসিং আউট কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

বিএনপি রক্ত শেখ হাসিনা হত্যা

বিজ্ঞাপন

পদ প্রত্যাশীদের দৌড়-ঝাঁপ
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৫২

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর