চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কারের আলোচনায় যারা
২৫ নভেম্বর ২০২২ ১৯:১১
ঢাকা: চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ এর চূড়ান্ত নাম ঘোষণা করা হবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর। গত বছর প্রথমবার পেয়েছিলেন প্রবন্ধে অনীক মাহমুদ, কবিতায় মাহমুদ কামাল ও কথাসাহিত্যে রুমা মোদক। ধারণা করা যায় গতবারের মতো এবারও পুরস্কারটি হবে দেশের সবচেয়ে নির্মোহ-মর্যাদাপূর্ণ সাহিত্য পুরস্কার।
আয়োজকদের ঘোষণা অনুযায়ী, এবার ‘চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কার’ দেওয়া হবে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে। এগুলো হলো: (১) প্রবন্ধ, (২) কথাসাহিত্য, (৩) কবিতা ও (৪) তরুণ কবি-সাহিত্যিক (৫) সাহিত্য সংগঠন ক্যাটাগরি। ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর প্রস্তাবিত নামগুলো নিয়ে পুরস্কার কমিটির পর্যালোচনা চলবে।
পুরস্কারজয়ীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারের ক্রেস্ট, সনদ ও নগদ অর্থ তুলে দেওয়া হবে। তাই‘চিন্তাসূত্র পুরস্কার-২০২২’-এর জন্য মনোনয়ন আহ্বানের পর থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। এবার কারা পাচ্ছেন প্রথমবার এই পুরস্কার, তা নিয়ে এরইমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে লেখকশিবিরে।
প্রবন্ধে যাদের নিয়ে সাহিত্যমোদীরা আলোচনা-সমালোচনায় ব্যস্ত, তারা হলেন—হামীম কামরুল হক, সরকার আবদুল মান্নান, কাজী মহম্মদ আশরাফ ও গাউসুর রহমান।
হামীম কামরুল হক পত্রপত্রিকায় লিখে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। তার প্রবন্ধগ্রন্থ হচ্ছে—‘জাদুবাস্তববাদ’, ‘ছোটগল্প লেখকের প্রস্তুতি ও অন্যান্য বিবেচনা’, ‘মৃত্যুক্ষুধা: গতিপ্রকৃতি ও পাঠ বিবেচনা’। এ ছাড়া যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন ‘লেখার শিল্প লেখকের সংকল্প’, ‘অসমাপ্ত একাত্তর মুক্তিসংগ্রামের দ্বিতীয় পর্যায়’। তার বইয়ের সংখ্যা কম হলেও ‘ছোটগল্প লেখকের প্রস্তুতি ও অন্যান্য’ বিবেচনা বইটি তরুণদের মনোযোগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।তরুণ গল্প লেখকরা বইটিকে দিকনির্দেশনা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
গবেষক, লেখক সরকার আবদুল মান্নান রচিত আলোচিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: ‘উপন্যাসে তমসাবৃত জীবন নরেশচন্দ্র সেন গুপ্ত, জগদীশ গুপ্ত, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়’, ‘জগদীশ গুপ্তের রচনা ও জগৎ’, ‘শিক্ষা ও স্বদেশচিন্তা’, ‘কবিতার রূপকল্প ও আত্মার অনুষঙ্গ’, ‘গল্পের আল্পনা’, ‘কবিতার স্থাপত্যরীতি ও অন্যান্য প্রবন্ধ’, ‘বাংলা কথাসাহিত্য আধুনিকতার কুশীলব’ অন্যতম। অধ্যাপক ড. সরকার আবদুল মান্নান আমাদের সাহিত্য-আলোচনার জগতে এক উল্লেখযোগ্য নাম। রচনার মনস্বীতার কারণেই মননশীল পাঠকসমাজে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা অনস্বীকার্য। তার ভাবনার বিচরণ ক্ষেত্রজুড়ে রয়েছে সাহিত্যের প্রতি একনিষ্ঠ মমত্ত্ববোধ ও নিজস্ব সাহিত্য-চিন্তন। ভাষা, সাহিত্য, রবীন্দ্ররচনা, আধুনিক গদ্যসাহিত্য ইত্যাদি নানাবিধ বিষয়ের উপরে তার রয়েছে অগাধ পাণ্ডিত্য।
কাজী মহম্মদ আশরাফ একাধারে কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক। মুক্তচিন্তা ও সাহিত্য অনুকূল পারিবারিক পরিবেশ, ধলেশ্বরী-শীতলক্ষ্যা-মেঘনা বৃত্তান্ত, নিসর্গ ও শিল্প নগরায়ণের প্রভাব তার সাহিত্যের প্রধান উৎস।কবিতা ও গল্পকে ছাড়িয়ে গেছে প্রকাশিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ।দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও দুই বাংলার লিটল ম্যাগাজিনে তার সরব উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।তার প্রবন্ধগ্রন্থগুলো হলো—‘হাসান হাফিজুর রহমান ও অন্যান্য’, ‘রবীন্দ্রনাথ: বৃষ্টির কবিতা’। সম্পাদনা করেছেন লিটল ম্যাগাজিন ‘অ’, তাত্ত্বিক গদ্য কাগজ ‘আপাতত’ ও ‘মাসিক শব্দচিত্র’।তিনি বেশকিছু জীবনীগ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন। সেগুলো হলো—‘মহাত্মা গান্ধী’, ‘শেক্সপিয়র’, ‘সুফিয়া কামাল’, ‘পাবলো পিকাসো’, ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াস’, ‘জয়নুল আবেদিন’।
কবি, প্রাবন্ধিক-গবেষক, কলামিস্ট, কথাসাহিত্যিক হিসেবে গাউসুর রহমান স্বচিহ্নিত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। কবি হিসেবে তিনি নিজস্ব Poetic diction অর্জনের জন্য সচেষ্ট। নতুন কণ্ঠস্বরের অধিকারী এই কবি প্রাবন্ধিক-গবেষক হিসেবে তুখোড় মেধাবী; তার বিশ্লেষণ অনবদ্য। নজরুল, জসীমউদ্দীন, ফররুখ আহমদ, শামসুর রাহমান সম্পর্কে তার নিজস্ব গ্রন্থ রয়েছে।নজরুল সম্পর্কে তার গ্রন্থের সংখ্যা চার। রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ সম্পর্কে দুটি গ্রন্থ আছে। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা বিশের বেশি। তাঁর উল্লেখযোগ্য দুটি গ্রন্থ হলো, জাতিসত্তার কবি : মুহম্মদ নূরুল হুদা ও কবিতার শামসুর রাহমান। অধ্যাপনায় নিয়োজিত গাউসুর রহমান বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ এমএ; পরবর্তী সময়ে তিনি এলএলবি ডিগ্রিও অর্জন করেছেন ।
কবিতা
এরপর কবিতায় যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে, তারা হলেন—আমিনুল ইসলাম, শামীম রেজা, ফরিদ আহমদ দুলাল, হেনরী স্বপন। প্রথাগত রীতির বাইরে এসে যে ক’জন কবি কবিতা-নির্মাণ করছেন, তাদের একজন কবি আমিনুল ইসলাম। তার কবিতায় একটা নতুন স্বর সৃষ্টি হয়েছে। আমিনুল ইসলাম কবিতায় নিজত্ব সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। মনন ও মেজাজে তাই তিনি স্বতন্ত্রধারার কবি।
কবি আমিনুল ইসলামের প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ: তন্ত্র থেকে দূরে; মহানন্দা এক সোনালি নদীর নাম; শেষ হেমন্তের জোছনা; কুয়াশার বর্ণমালা; পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি; স্বপ্নের হালখাতা; প্রেমসমগ্র; জলচিঠি নীলস্বপ্নের দুয়ার; শরতের ট্রেন শ্রাবণের লাগেজ; হিজলের সার্কিট হাউস প্রভৃতি।
শামীম রেজা নব্বই দশকে কবিতা লিখতে শুরু করেছেন।১৯৯০ থেকে ২০০১-এর অনুভূতিমালা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পাথরচিত্রে নদীকথা’। এরপর একে একে ‘নালন্দা দূর বিশ্বের মেয়ে’ (২০০৪), ‘যখন রাত্তির নাইমা আসে সুবর্ণনগরে’ (২০০৬), ‘ব্রহ্মাণ্ডের ইসকুলে’ (২০০৯), ‘শামীম রেজার কবিতা’ (২০১২), ‘হৃদয়লিপি’ (২০১৪) বা ‘দেশহীন মানুষের দেশ’ (২০১৮) থেকে চর্যালোক তার স্বতন্ত্র যাত্রা অব্যাহত থেকেছে। পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার।
কবি, নাট্যকার,কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও সংগঠক ফরিদ আহমদ দুলালের জন্ম ১৮ মে, ১৯৫৬, ময়মনসিংহে। মূলত তিনি প্রেমের কবি। তার গদ্যলিরিক কবিতা সরল ও প্রাণবন্ত। যার কবিতা পাঠককে মুহূর্তেই নিয়ে যায় ভাবের গভীরে। তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহের গীতিভাসান, বাংলাদেশের কবি ও কবিতা, সত্তরের নির্বাচিত কবি ও কবিতা, নাইওর, নিরাপদ দূরত্বে থাকি, কৃষ্ণকলি নাম তার প্রভৃতি।
হেনরী স্বপন নিরূপিত ছন্দে যেমন লিখেছেন, তেমনি লিখেছেন টানা গদ্যেও। তবে তার কবিতায় ছন্দের বৈচিত্র্যের চেয়ে আলঙ্কারিক বৈচিত্র্য বেশি।তার কবিতায় ত্রিবিন্দুর পাশাপাশি স্পেসের ব্যবহার লক্ষ্যণীয়। কবিতার ত্রিবিন্দু উল্লম্ফনকে মূর্ত করে তুললেও স্পেস ভাবনার বিস্তারকে বিমূর্ত করে। ফলে ত্রিবিন্দু প্রয়োগের উদ্দেশ্য পাঠকের কাছে যতটা স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে, স্পেস ততটা নয়। ত্রিবিন্দু নিরূপিত ছন্দে বাকসংযমের দ্যোতনা এনে দেয়; স্পেস ব্যঞ্জনাঋদ্ধ করে তোলে মিতবাককে। সমকালীন বাংলা কবিতায় ত্রিবিন্দুর প্রয়োগ অনেকটা কমে এসেছে। হেনরী স্বপন ভাবনার উল্লম্ফনকে স্পষ্ট করে তোলার জন্য কবিতায় ত্রিবিন্দুর প্রয়োগকে অনিবার্য অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করেছেন বলেই মনে হয়।তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর অন্যতম হলো- কীর্তনখোলা, মাটির বুকেও রৌদ্রজ্বলে, ও মোমের শরীরে আগুন, জংধরা ধুলি, কাস্তে শানানো মোজার্ট, ঘটনার পোড়ামাংস, হননের আয়ু, উড়াইলা গোপন পরশে।ভাষাপ্রকাশ নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা। সম্পাদনা গ্রন্থ: জীবনানন্দ।
কথাসাহিত্য
কথাসাহিত্যে আলোচনায় রয়েছেন সাদিয়া সুলতানা, রাজীব নূর, প্রশান্ত মৃধা ও আকমল হোসেন নিপু। সাদিয়া সুলতানার গল্প বলার সাবলীল ঢং, চমৎকার ভাষা-বিন্যাস, পরিবেশ অনুসারে অলংকার প্রয়োগ ও নাটকীয়তা লক্ষ করা যায়। প্রায় সবগুলো গল্পে মধ্যবিত্তের আঁতের খবর, তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন ও মানুষের মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলো প্রাধান্য পায়; ফলে গল্পগুলো হয়ে ওঠে মানবিক-অমানবিক মানুষের গল্প। সেগুলো হয়ে ওঠে এদেশের মানুষের গল্প, শিক্ষিত বাঙালির গল্প, এই সময়ের গল্প, প্রবহমান মানুষের চেনা গল্প। সাদিয়া সুলতানার দশটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে গল্পগ্রন্থ ‘ঘুমঘরের সুখ-অসুখ’, ‘উজানজল’ ও উপন্যাস ‘বিয়োগরেখা’ অন্যতম।
রাজীব নূর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে সম্মান ও স্নাতকোত্তর। পেশায় লেখক ও সাংবাদিক। বর্তমানে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর হিসেবে আছেন। রিপোর্টিংয়ের জন্য বাংলাদেশে প্রচলিত প্রায় সব পুরস্কার পেয়েছেন। তার গল্প পাঠককে আকৃষ্ট করেছে।তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘দ্রৌপদী ও তার প্রেমিকেরা’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া ‘পুরুষ, পিতৃত্ব ও অন্যান্য গল্প’, ‘সেপ্টেম্বর অন টেকনাফ রোড’ এবং ‘হরিণা ও সোনারতরী সকাল’ পাঠকমহলে বেশ সাড়া ফেলেছে।
প্রশান্ত মৃধা মূলত কথাসাহিত্যিক। তার জন্ম ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর বাগেরহাটে।কলেজে শিক্ষকতায় যুক্ত।গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি প্রবন্ধ ও কলামসহ বিভিন্ন ধরনের গদ্য লেখেন। ব্যক্তিগত ও রম্য রচনায়ও আগ্রহী।বইয়ের সংখ্যা পঁয়ত্রিশ।সাহিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন ‘বাঙলার পাঠশালা আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কথাসাহিত্য পুরস্কার’, ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার’ এবং ‘কাগজ তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার’। তার উল্লেখযোগ্য বই—‘হারিয়ে যাওয়া জীবিকা’, ‘বিগতকালের অনুমান’, ‘ডুগডুগির আসর’, ‘জল ও জালের তরঙ্গ’, ‘আপন সাকিন’, ‘কুহক বিভ্রম’ ও ‘যুধিষ্ঠিরের সঙ্গী’।
আকমল হোসেন নিপু পেশায় সাংবাদিক। তার বইগুলো হচ্ছে—গল্প: ‘জলদাসের মৎস্যঘ্রাণ’, ‘বুড়ি চাঁদ ডুবে যাবার পরে’, ‘আমরা খুব খারাপ সময়ে বেঁচে আছি’, ‘সাদা কাপড়ের শোক’, ‘রাতটা পূর্ণিমার ছিল’, উপন্যাস: ‘হলুদ পাখির ডাক অথবা অন্ধকারের নদী’, ‘ভূমিপুত্র অথবা হাওর পুরাণ’, ‘হীরামতি ও তার রাঁধুনীকাল’। তার ‘নির্বাচিত গল্প’ গ্রন্থ বেরিয়েছে ২০২০ সালের বইমেলায়।
তরুণ কবি-সাহিত্যিক
তরুণ কবি-সাহিত্যিক হিসেবে শামীম হোসেন, রবু শেঠ, মনিরুল মনির, তিথি আফরোজ, আহমেদ শিপলু, রাহেল রাজিব, সাদাত হোসাইন, রণজিৎ সরকার, আশান উজ জামান, ইকবাল খন্দকার, গিরীশ গৈরিক, চাণক্য বাড়ৈ ও তুহিন তৌহিদ, শাহীন সপ্তম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তরুণদের মধ্যে তারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করছেন। সামগ্রিক বিচারে পাঠকের কাছে সমাদৃত হচ্ছেন।
এরমধ্যে ইকবাল খন্দকার শতাধিক বইয়ের স্রষ্টা। রণজিৎ সরকারের বইয়ের সংখ্যাও অর্ধশতাধিক। রাহেল রাজিব কবি, কথাসাহিত্যিক ও অধ্যাপক হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয়। সাদাত হোসাইনও হালের পাঠকপ্রিয় লেখক হিসেবে সমাদৃত। আশান উজ জামানও তার লেখায় মৌলিকত্ব ধরে রাখছেন।কবিতায় যে কজন প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাদের মধ্য থেকে গিরীশ গৈরিক, চাণক্য বাড়ৈ এবং তুহিন তৌহিদ প্রতিশ্রুতিশীল হিসেবে জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন।
এ ছাড়া তরুণ সাহিত্যিক হিসেবে শাহীন সপ্তম রয়েছেন আলোচনায়। তার কবিতার বিষয় ব্যক্তি-অভিজ্ঞতার স্বরূপ অনুসন্ধান ও তার মর্ম উপলব্ধি। তার লেখায় ব্যক্তির উপলব্ধির জায়গাগুলো ধরা দেয় কাব্যিক মহিমায়। শেষাবধি তার কবিতা জীবনের বিশেষ অর্থবহতার ইঙ্গিত দেয়। ২০২১ সালে প্রকাশিত তার কবিতার বই ‘পাথুরে ফুলের গন্ধে’ বেশ নন্দিত ও পাঠক সমাদৃত গ্রন্থ।
তরুণ শিশুসাহিত্যিক ক্যাটাগরিতে আলোচনায় রয়েছেন তৌহিদ এলাহী। সহজ-সরল ভাষায় তার গল্পের অভিব্যক্তি জানান দেয় স্বতন্ত্রমণ্ডিত গন্তব্যপথ। তিনি কেবল নিরেট গল্প বলেন না, গল্পের আড়ালে শিশুদের মনোরঞ্জন উপযোগী রসদ জোগান নির্মোহভাবে। শৈশব থেকেই লেখালেখিতে তৌহিদ এলাহীর পথচলা। তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে দেশের প্রায় সব জাতীয় দৈনিকে। এরইমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে একাধিক বই। সেগুলোর মধ্যে বইকাঁটা ও পুরস্কার অন্যতম।
সংগঠন
সাহিত্যিকদের পাশাপাশি সাহিত্যসেবা ও চর্চায় নিবেদিত সংগঠকদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, কবি গাজী লতিফ, আরিফুল হক কুমার, ইসলাম রফিক প্রমুখ, ম্যাজিক লণ্ঠনের প্রধান সম্পাদক কবি রতন মাহমুদ, চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালক রফিকুজ্জামান রনি প্রমুখ।
আলোচনায় অনেক নাম, তারাও যোগ্যতায় কে কারও কম নন। তবে শেষাবধি কে পাবেন চিন্তাসূত্র পুরস্কার, তা সময়ই বলে দেবে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা।
সারাবাংলা/একে