Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন রওশন এরশাদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ নভেম্বর ২০২২ ১২:৪৭

ঢাকা: জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ প্রায় ৫ মাস পর দেশে ফিরেছেন। রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে তিনি থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

জাতীয় পার্টির নেতা ইকবাল হোসেন রাজু জানান, বেগম রওশন এরশাদকে নিয়ে বিমানটি ইতোমধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে দলের সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, সংসদ সদস্য রত্মা আমিন, সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঁঙ্গা, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া রুস্তম আলী ফরাজী বিমানবন্দরে এলেও অসুস্থতার কারণে জাহাঙ্গীর গেট থেকে ফিরে গেছেন।

অন্যদিকে, জি এম কাদের সমর্থিত ঢাকা মহানগরের নেতা সফিকুল ইসলাম সেন্টুও বিমানবন্দরে রওশনকে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত আছেন।

গত বছরের ১৪ আগস্ট রওশন এরশাদের ফুসফুসে জটিলতা দেখা দেয়। পরে তার অক্সিজেন লেভেল কমতে শুরু করলে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন বেশ কিছুদিন তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে কেবিনে নেওয়া হয়। হাসপাতালে থাকাকালেই গত বছর ২০ অক্টোবর আবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্বিতীয় দফায় আইসিইউতে নেওয়া হয়।

ফুসফুসের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন রওশন এরশাদ। ওই সময় তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে (গত বছর ৫ নভেম্বর) রওশন এরশাদকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে থাইল্যান্ডে নেওয়া হয়। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন সন্তান রাহ্গির আলমাহি এরশাদ ও পুত্রবধূ মাহিমা এরশাদ। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বামরুগ্রাদ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসায় নেন।

বিজ্ঞাপন

চলতি বছরের ২৭ জুন বেগম রওশন এরশাদ দেশে ফিরেছিলেন। সঙ্গে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের একজন নার্সও নিয়ে আসেন। ওই সময় তিনি বাসায় না গিয়ে গুলশান একটি হোটেলে উঠেন। তখন বাজেট অধিবেশন চলছিল। বেগম রওশন এরশাদ বাজেট অধিবেশনে যোগ দেন এবং কিছু সময় অধিবেশন কক্ষে থেকে চলে যান। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আসন থেকে উঠে এসে বেগম রওশন এরশাদের আসনের কাছে এসে স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। বেগম রওশন এরশাদ ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশে থাকেন। পরে আবার চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চলে যান।

একাদশ জাতীয় সংসদ থেকে বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করছেন জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদে থাকা রওশন এরশাদ। কিন্তু ব্যাংককে চিকিৎসাধীন রওশন হঠাৎ ৩০ আগস্ট দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন আহ্বান করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠান। বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর পরদিনই জাপার সংসদীয় দলের সদস্যরা বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশনকে সরিয়ে এই পদে জি এম কাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন।

দলের ২৬ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে রওশন এরশাদ ও তার ছেলে সাদ এরশাদ ছাড়া বাকি ২৪ জনই এই সিদ্ধান্তে একমত হন। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্পিকারকে জানায় জাপার মহাসচিব মুজিবুল হকের নেতৃত্বে দলের একটি প্রতিনিধিদল। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর বিরোধী দলের চিফ হুইপ ও জাপার সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান এ বিষয়ে লিখিত আবেদন স্পিকারের কার্যালয়ে জমা দেন।

পরে অবশ্য মসিউর তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন এবং স্পিকারকে পাল্টা চিঠি দিয়ে জাপার সংসদীয় দলের নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মসিউরকে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জাপা। এমনকি দলের দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়।

গত ৩০ অক্টোবর স্পিকারের কাছে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয় জি এম কাদেরকে বিরোধীদলের নেতা হিসেবে ঘোষণা না দিলে জাপা সংসদ অধিবেশনে যোগদান করবে না। এরপরই বেগমর রওশন এরশাদ তার ডাকা ২৬ নভেম্বর কাউন্সিল স্থগিত করেন। পরের দিন জাতীয় পার্টি সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়।

এরপর দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধার দায়ের করা একটি মামলায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ (১ম আদালত) মাসুদুল হক এই আদেশ দেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞার একটি কপি মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঁঙ্গা স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে জমা দিয়েছেন। ফলে বিরোধীদলীয় নেতার পদের বিষয়টি স্পিকারের সিদ্ধান্তে ঝুলে আছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমও

চিকিৎসা রওশন এরশাদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর