চট্টগ্রামে কলেজ ছাত্র খুনের দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন
২৭ নভেম্বর ২০২২ ১৪:১০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ২৪ বছর আগে চট্টগ্রাম নগরীতে এক কলেজ ছাত্রকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দু’জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
রোববার (২৭ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়া এ রায় দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ওমর ফুয়াদ।
দণ্ডিতরা হলেন- মো. রফিক ও আজিম উদ্দিন আহমেদ রাজা। এ ছাড়া অনুপ মল্লিক নামে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ সারাবাংলাকে জানান, দণ্ডিত রফিক হাজতে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তাকে কারাগারে উপস্থাপন করা হয়। রায়ের পর আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। আজিম উদ্দিন পলাতক এবং অনুপ মল্লিক জামিনে আছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও অতিরিক্ত মহানগর পিপি নোমান চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, ১৯৯৮ সালের ১৬ নভেম্বর নগরীর কোতোয়ালী থানার চন্দনপুরায় দারুল উলুম মাদরাসার সামনে মাসুদ চৌধুরী নামে এক কলেজ ছাত্রকে তার বাড়ির সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষী আব্দুল হালিম প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
জবানবন্দিতে আব্দুল হালিমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কয়েকজন যুবক এসে বাসায় মাসুদ চৌধুরী আছেন কি না জানতে চায়। তিনি আছেন বলে জানালে তারা বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। হালিম তখন বাসার অদূরে লন্ড্রিতে কাপড় আনতে যান। কয়েক মিনিটের মধ্যে গুলির শব্দ শুনে তিনি দৌড়ে বাসার সামনে আসার সময় দেখতে পান, দু’জন গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে রাস্তা পার হয়ে চলে যাচ্ছে। বাসার সামনে মাসুদের প্রাণহীন রক্তাক্ত মরদেহ দেখেন তিনি।
এ ঘটনায় মাসুদের চাচা হারুন চৌধুরী অজ্ঞাতনামা আততায়ীদের আসামি করে কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত পাওয়া তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তিনজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করে আদালত বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর এ রায় দেন আদালত।
তবে এজাহার, অভিযোগপত্র এবং সাক্ষ্যে তিন সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা বলা হলেও কলেজ ছাত্র মাসুদকে কেন খুন করা হয়েছে সেটা আসেনি বলে জানান অতিরিক্ত মহানগর পিপি নোমান চৌধুরী।
খালাস পাওয়া আসামি অনুপ মল্লিকের আইনজীবী প্রভূতি রঞ্জন বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড ঘটানোর প্রত্যক্ষদর্শী আছে। তবে কী কারণে খুন, প্রত্যক্ষদর্শী জানেন না। মামলার বাদিও এজাহারে কিছু উল্লেখ করেননি। আসামিদের জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। অনুপ মল্লিকের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্য দেননি। এজন্য আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। বাকি দুজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত।’
সারাবাংলা/আরডি/ইআ