শিশুকে খুনের পর লাশ ছয় টুকরো: আবির ফের রিমান্ডে
২৮ নভেম্বর ২০২২ ১৩:২০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে এক শিশুকে খুনের পর ছয় টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার তরুণকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আব্দুল হালিম রিমান্ড মঞ্জুর করেন
গ্রেফতার আবির আলী (১৯) নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা আজহারুল ইসলামের ছেলে। তাদের বাড়ি রংপুর জেলায়। শিশু খুনের মামলায় তার সম্পৃক্ততার তথ্যপ্রমাণ পাবার পর বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাতে তাকে গ্রেফতার করে পিবিআই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) মনোজ কুমার দে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে প্রথমবার দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদে আবির বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আরও তথ্যের জন্য তাকে দশদিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেছিলাম। আদালত সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আমরা তাকে হেফাজতে নিয়েছি।’
গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানার মেয়ে চার বছর ১১ মাস বয়সী আলীনা ইসলাম আয়াত নিখোঁজ হন। ১০ দিন পর পিবিআই আবির আলীকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে নিখোঁজ রহস্যের উদঘাটন করে।
পিবিআইয়ের ভাষ্যমতে, মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আয়াতকে অপহরণের পরিকল্পনা করে তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া আজহারুলের ছেলে আবির আলী। পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ আবিরকে আয়াত ‘চাচ্চু’ বলে সম্বোধন করতো। ১৫ নভেম্বর বিকেলে বাসার সামনে থেকে আয়াতকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে আবির ঢুকে যায় তার বাবার বাসায়, যেখানে তখন কেউ ছিল না। সেখানে ১৫ মিনিটের মধ্যে শ্বাসরোধ করে আয়াতকে খুন করে আবির।
এরপর লাশ ব্যাগে ভরে নিয়ে যায় নগরীর আকমল আলী সড়কের পকেটগেট বাজার এলাকায় তার মা আলো বেগমের বাসায়। মা-বাবার মধ্যে বিচ্ছেদের পর আবির মায়ের বাসায় থাকত। তবে জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা যে এলাকায়, সেই বাবার বাসায়ও তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। আবির মায়ের বাসায় নিয়ে লাশ বাথরুমের তাকের ওপর লুকিয়ে রাখে। রাতে সেই লাশ বাথরুমে নিয়ে কেটে ছয় টুকরা করে ছয়টি ব্যাগে ভরে রাখে।
পরদিন ১৬ নভেম্বর সকালে লাশের তিনটি টুকরা নগরীর আকমল আলী রোডের শেষপ্রান্তে বেড়িবাঁধের পর আউটার রিং রোড সংলগ্ন বে-টার্মিনাল এলাকায় সাগরে ভাসিয়ে দেয়। ওইদিন রাতে বাকি তিন টুকরা আকমল আলী রোডের শেষপ্রান্তে একটি নালায় স্লুইচগেটের প্রবেশমুখে ফেলে দেয় আবির।
কিন্তু মুক্তিপণ আদায়ের জন্য সংগ্রহ করা সীম ব্লক থাকায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি আবির। আয়াতের খেলার সাথীদের কাছ থেকে তাকে কোলে নেয়ার তথ্য এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আবিরের গতিবিধি দেখে তাকে গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতারের পর লাশের টুকরো ফেলে দেয়ার স্থানগুলো সরেজমিনে পিবিআই কর্মকর্তাদের দেখিয়ে দেয় আবির আলী।
শনিবার তাকে দুইদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। লাশের টুকরোগুলোর সন্ধানে আবিরকে নিয়ে রোববার আবারও তল্লাশি চালানো হয়।
সারাবাংলা/আরডি/ইআ