অন্যরকম এক উদযাপন হলিক্রসে
২৮ নভেম্বর ২০২২ ১৭:১৭
ঢাকা: কেউ ভি চিহ্ন দেখাচ্ছেন। কেউবা বন্ধুদের সঙ্গে ছবি তুলছেন। শিক্ষকের পা ছুঁয়ে সালাম করছেন কোনো কোনো শিক্ষার্থী। শিক্ষিকাও ছাত্রীদের কপালে আশীর্বাদের চুম্বন একে দিচ্ছেন। এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এমন দৃশ্য দেখা গেছে রাজধানীর হলিক্রস গার্লস হাই স্কুলে।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে হলিক্রস স্কুলের এই দৃশ্য ছিলো হৃদয় নিংড়ানো। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই মেলবন্ধন যেকোন মানবিক মানুষের হৃদয় জাগাবে।
এবার এসএসসি পরীক্ষায় হলিক্রস স্কুল থেকে অংশ নিয়েছিল ২৫৪ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে জিপিএ ফাইভ (এ প্লাস) পেয়েছে ২২৯ জন ও বাকি ২৫ জন এ গ্রেডে উন্নীত হয়েছে। বরাবরে মতোই প্রতিষ্ঠানটি থেকে কোনো ফেল নেই। এর আগে ২০২১ সালে স্কুলটি থেকে ২৩৪ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। সে বছর ২২০ জন এ প্লাস ও ১৪ জন এ গ্রেডে উন্নীত হয়।
ফলাফল নিয়ে খুশি নিয়ে শিক্ষার্থীরা। জিপিএ ফাইভ পাওয়া শিক্ষার্থী শুভ্রা সারাবাংলাকে বলেন, রেজাল্ট নিয়ে আমি অনেক খুশি। মা অনেক টেনশনে ছিলেন। সারাক্ষণ আমাকে নিয়ে টেনশন করেন। রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পর খুব খুশি লাগছে। মাও খুশি হয়েছেন।
শুভ্রা আরও জানান, করোনার কারণে আমাদের রেজাল্ট হাতে পেতে অনেক সময় লেগেছে। এসএসসি শেষ করতে অনেক লেট হয়েছে। আবার এইচএসসিতেও টাইম কম পাবো।
মিশেল নামের আরেক শিক্ষার্থী সারাবাংলাকে বলেন, ‘রেজাল্ট নিয়ে কোনো টেনশন ছিল না। কনফিডেন্ট ছিলাম। রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পর খুব ভালো লাগছে। ‘
এই শিক্ষর্থী আরও বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনলাইনে ক্লাস করতে হয়েছে। সরাসরি ক্লাস করতে পারিনি। আবার অনলাইন ক্লাসেও ইন্টারনেট সমস্যা করেছে। আমার এই রেজাল্টের জন্য শিক্ষক ও বাবা-মার সবার ভূমিকা রয়েছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
স্কুলটির সিনিয়র শিক্ষক শ্রীমন্ত পিউজ রড্রিক্স সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবারের রেজাল্টে আমরা খুবই খুশি। করোনাকাল কাটিয়ে ছাত্রীরা ভালো রেজাল্ট করেছে। এই ফলাফলের জন্য তিন পক্ষেরই অবদান রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেমন চেষ্টা করেছে, তেমনি অভিভাবক ও আমরা শিক্ষকরা একই রকম চেষ্টা করেছি। এবার অন্যবারের তুলনায় আমাদের স্কুলের ফলাফল কিছুটা ভালো হয়েছে। পরীক্ষা সঠিক সময়ে হল ফলাফল আরও ভালো হতো।’
স্কুলের ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেছে, নোটিশ বোর্ডে কেউ কেউ চোখ বুলাচ্ছেন। কেউবা সেলফি তুলছেন। সেখানে অভিভাবকরাও রয়েছেন। প্রিয় শিক্ষক ও শিক্ষিকার পা ছুঁয়ে সালাম করতে দেখা গেছে ছাত্রীদের। শিক্ষিকাকে জড়িয়ে ধরছিলেন তারা। কোনো কোনো শিক্ষিাকা ছাত্রীদের কপালে আশীর্বাদ চুম্বনও এঁকে দিচ্ছেলেন। তবে এই প্রতিবেদক আকস্মিক ঘটে যাওয়া এমন দৃশ্যের পুরোচিত্র মুঠোফোনে ধারণ করতে সক্ষম হননি।
এ বিষয়ে স্কুলটির সিনিয়র শিক্ষক শ্রীমন্ত পিউজ রড্রিক্স সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই সম্পর্ক যে কাউকে অনুপ্রেরণা দেবে। এটিই আমাদের আসল প্রাপ্তি।’
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে