Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাভী পালনে ভাগ্য খুলেছে মান্নানের

আব্দুর রউফ পাভেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৯ নভেম্বর ২০২২ ১১:১৭

মান্নানের খামারের একাংশ, ছবি: সারাবাংলা

নওগাঁ: জেলার রাণীনগর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল মান্নান। লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ২০১৭ সালে নিজ এলাকায় গড়ে তোলেন ‘আমিন হাসান এগ্রো লিমিডেট’ নামে একটি সমন্বিত খামার। উপজেলার মালশন গ্রামের মালতিপুকুর এলাকায় ১৭ বিঘা জমিতে প্রতিষ্ঠিত এই খামারে গাভী পালন ও মোটাতাজাকরণ করা হয়। বর্তমানে ১২ জন বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে তার খামারে। তার দেখাদেখি অনেকেই ঝুঁকছেন এই পেশায়।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মান্নানের খামারে বর্তমানে গরু আছে ৪২টি। এর মধ্যে শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ান ও ব্রাহমা’সহ কয়েকজাতের গরু আছে তার। ইতিমেধ্যই ওই গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে ছোট-বড় ১৬টি নতুন খামার তৈরি হয়েছে। ওই সব খামারে কেউ গাড়ল, গরু, ছাগল ও দেশি প্রজাতির হাঁস-মুরগি পালন করছেন তারা, আবার মাছ চাষ করছেন অনেকে।

জানা গেছে, মান্নানের খামারের গরু থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪৫-৫০লিটার দুধ পাওয়া যায়। কিন্তু স্থানীয় কোনো বাজার না থাকায় দুধ উৎপাদন করে অনেকটা লোকসান দিয়ে তা বিক্রি করতে হচ্ছে গোয়ালাদের কাছে। যদি স্থানীয়ভাবে দুধের নির্দিষ্ট বাজার কিংবা বহুজাতিক কোম্পানি দুধ সংগ্রহ করত, তাহলে মান্নানের মতো খামারিদের দুধ উৎপাদন করে লোকসান গুনতে হতো না। বর্তমান খামারে উৎপাদিত দুধ দিয়ে স্থানীয়দের চাহিদা পূরণ হচ্ছে।

মান্নানের খামারের একাংশ, ছবি: সারাবাংলা

মান্নানের খামারের একাংশ, ছবি: সারাবাংলা

খামারি আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমার খামারটি মূলত সমন্বিত হওয়ার কারণে আমি একদিকের লাভ দিয়ে অন্যদিকটাকে সচল রাখার চেষ্টা করছি। বর্তমানে আমার খামারে ব্রাহমা জাতের ৩টি ষাড় বিক্রির উপযোগী হলেও বাজারে দাম না থাকায় তা বিক্রি করতে পারছি না। এছাড়া দুধ বিক্রিতে তো লোকসান হচ্ছেই। তবুও খামারটি আমার স্বপ্ন হওয়ার কারণে সচল রাখা ও আরও সম্প্রসারিত করার চেষ্টা করে আসছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘খামারে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক ও সুষম খাবার প্রদানের মাধ্যমে সম্পূর্ণ হালাল উপায়ে গরু ও গরুর বাছুর লালন-পালন করা হয়। যদি সরকারের পক্ষ থেকে বড় ধরনের সহযোগিতা পাই, তাহলে খামারটিকে আরও বড় করার ইচ্ছে আছে।’

বিজ্ঞাপন

পার্শ্ববর্তী গিরিগ্রামের বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘মান্নান ভাইকে দেখে আমিও বাড়িতে কয়েকটি গরু পালন শুরু করেছি। তবে দিন দিন গো-খাদ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে আমরা লোকসানের মধ্যে রয়েছি। এছাড়া সরকারের প্রণোদনাও আমাদের ভাগ্যে জোটে না। যার কারণে বর্তমানে গরু মোটাতাজাকরণ বা লালন-পালন ব্যয়বহুল। ফলে আমার মতো অনেক ছোট খামারিরা তাদের খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইন বলেন, ‘মান্নানের খামারটি একটি আদর্শ খামার। প্রাণি সম্পদের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মান্নানকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করার চেষ্টা করব। যাতে করে তিনি আরও ভালো কিছু করতে পারেন এবং তার খামারে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশের প্রাণিজও আমিষের চাহিদা পূরণ হয়।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মহির উদ্দীন বলেন, ‘আমার দেখা মতে জেলায় যতগুলো খামার আছে তার মধ্যে মান্নানের সমন্বিত খামারটি একটি আদর্শ খামার। গ্রামের মধ্যে এমন একটি সমন্বিত খামার সত্যিই একটি দৃষ্টান্ত। আমার দফতরের লোকজন সব সময় খামারটিকে পর্যবেক্ষণ করে আসছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে খামারি মান্নানকে সব সময় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।’

সারাবাংলা/এনএস

গাভী পালন নওগাঁ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর