সবার চেষ্টায় করোনাযুদ্ধে জয়লাভ করছে বাংলাদেশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
২৯ নভেম্বর ২০২২ ২৩:৫১
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় নানা বাধার সম্মুখীন হয়েছি। এ সময় আমরা কেন আগাম প্রস্তুতি নিইনি সেটা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন করেছেন, সমালোচনা করেছেন। অথচ এটা ছিল সম্পূর্ণ নতুন একটি বিষয়। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। আগাম প্রস্তুতি কি করে নেব? করোনাকালে আমরা হাসপাতাল তৈরিতেও বাধা পেয়েছি। ভয়ে অনেক এলাকার লোকজন হাসপাতাল তৈরি করতে দিতে চায়নি। তবে সবার চেষ্টায় করোনাযুদ্ধে বাংলাদেশ জয়লাভ করছে।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীতে হোটেল রেডিসন ব্লুতে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সম্মুখযোদ্ধাদের সম্মানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনাকালীন দিনগুলো আমরা ভুলিনি। আমাদের প্রস্তুতি ছিল না। আমরা ভেবেছিলাম করোনা আমাদের দেশে আসবে না। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাসে আমাদের দেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। মৃত্যুর ঘটনাও একই মাসে ঘটে। আমরা মুক্তিযুদ্ধ অংশ নিতে পারিনি। কিন্তু করোনাকেই একটা যুদ্ধ হিসেবে নিয়েছি। এটাকে দেশের জন্য কিছু করার সুযোগ হিসেবে নিয়েছি। অনেকে আপনজন হারিয়েছেন। আমাদের সব থেকে আশার দিক ছিল চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট। তারা কেউ পিছপা হয়নি। সবাই তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে। আর তাই বাংলাদেশ করোনাযুদ্ধে জয়লাভ করছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চালুর চেষ্টা করেছি। ভয় পেয়ে অনেকেই তখন চিকিৎসা দিতে রাজি ছিল না। কিন্তু সবশেষে সবাই এগিয়ে এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শূন্য হাতে করোনা মোকাবিলার কাজ শুরু করেছি। অল্প সময়ের মধ্যে করোনা চিকিৎসায় ২০ হাজার আলাদা বেড তৈরি করেছি, সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করেছি। আমাদের মাত্র একটা ল্যাব ছিল, আর এখন পর্যায়ক্রমে সরকারি-বেসরকারি মিলে ৮০০ এর অধিক ল্যাব আছে। আমরা জনগণের জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করেছি। ফ্রন্টলাইনারদের আগে দিয়েছি, এরপর বয়স বিবেচনায় দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে সবাই ভ্যাকসিনের আওতায় এনেছি। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা নৌকা করে, পায়ে হেঁটে, পাহাড় চড়ে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। আমরা একদিনে এক কোটি ২০ লাখ টিকা দিয়েছি।’
নিজের নয় বছর দায়িত্ব পালনের তথ্য তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে ১৫ হাজার চিকিৎসক, ২৫ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আট বিভাগে হাসপাতাল তৈরির কাজ চলমান। অনেক হাসপাতালে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয়েছে। আমাদের চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ চলছে। আমাদের একটি ভ্যাকসিন প্লান্ট তৈরির কাজ চলমান আছে। ১০ বেড আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস সেন্টার তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।’
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসক, নার্স স্বাস্থ্যকর্মী, সেনাবাহিনী, পুলিশ বেসরকারি চিকিৎসা খাত ও গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং ধন্যবাদ দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম বাদল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম