Thursday 03 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রিজার্ভ এখন ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ নভেম্বর ২০২২ ২৩:০৪
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় ধারাবাহিকভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বুধবার (৩০ নভেম্বর) রিজার্ভ থেকে ৭১ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারে। এই রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের (প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন হিসাবে) আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করলে এই রিজার্ভ থেকে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। সেক্ষেত্রে দেশের রিজার্ভ হবে ২৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। এটি দিয়ে তিন বছরের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা যাবে। রিজার্ভের এই পরিমাণ গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রতিনিয়ত ওঠানামা করছে। রিজার্ভ থেকে সরকারি কেনাকাটায় ডলার ছাড় করা হয়। আবার প্রবাসীরা প্রতিনিয়ত রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রতিদিনই রিজার্ভ পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের রিজার্ভ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি নভেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহের গতি কমেছে। এই মাসে প্রতিদিন গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার করে। বিপরীতে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দেশে প্রতি মাসে আমদানির জন্য ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করছে সরকার। সরকারি অতি প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

একদিকে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, বিপরীতে রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতে বড় ধাক্কা লেগেছে। এই অবস্থায় আমদানি নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে নতুন এলসি খোলা কমেছে। তবে বাকি বা দেরিতে পরিশোধের শর্তে আগের খোলা এলসির দায় এখন পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কমেনি।

নভেম্বরে রিজার্ভের চিত্র

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের (নভেম্বর) ১ তারিখ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ নভেম্বর কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে। এরপর নভেম্বরের ৭ তারিখে রিজার্ভ থেকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১৩৫ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়। পাশাপাশি আমদানি দায় মেটাতে ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয় রিজার্ভ থেকে। ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে প্রায় ৩৪ দশমিক ২৮ বিলিয়নের নেমে আসে। গত ৯ নভেম্বর রিজার্ভ ছিল ৩৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন, ১৪ নভেম্বর ৩৪ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, গত ১৫ নভেম্বর রিজার্ভ থেকে ১১৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করায় তা নেমে আসে ৩৪ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে। ১৬ নভেম্বর ৬৯ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হলে রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। পরে ১৭ নভেম্বর আবারও বেড়ে ৩৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার হয়। এভাবে গত ২১ নভেম্বর রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। গত ২২ নভেম্বর ৩৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করায় রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলারে। আর গত ২৩ নভেম্বর রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলারে। এরপর বুধবার (৩০ নভেম্বর) সরকারি কেনাকাটা বাবদ ৭৭ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করায় তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।

আইএমএফ‘র হিসাবে কেন রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর থেকে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে যা থাকে সেটিই হচ্ছে নেট রিজার্ভের পরিমাণ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার।

তাদের হিসাব বলছে, রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সরবরাহ করা সাত বিলিয়ন ও শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার, গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) ২০ কোটি, লং টার্ম ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) তহবিলে ৩ কোটি ৮৫ লাখ, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে দেওয়া ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) আমানত রিজার্ভে দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। এসব অর্থ বাদ দিলে আইএমএফ‘র হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ ২৫ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।

সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম

নভেম্বর রিজার্ভ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর