নাশকতা নয় শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছি: বুলু
১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৫৫
ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, আমরা সারাদেশে আটটি সমাবেশ করেছি। কোথাও কোনো সহিংসতা হয়নি। ঢাকাতেও হবে না। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা করছি না। তবে এর বাইরে অন্য কেউ যদি নাশকতা করে বা করার চেষ্টা করে সেটা পুলিশ দেখবে। সেটা তাদের দায়িত্ব। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশ সদর দফতরে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে বুলুর নেতৃত্বে বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে পুলিশ সদর দফতরে যান। এক ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক করেন তারা। দুপুর সোয়া ২টার দিকে সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় বিএনপি প্রতিনিধি দল।
চার সদস্যের বিএনপির প্রতিনিধি দলের অন্যরা হলেন- দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ একঘণ্টা বৈঠক করেছি। আইজিপি, পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে ছিলেন। আমরা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, গায়েবি মামলা, বাধা-হামলার ঘটনা, আওয়ামী লীগের বাধাসহ নানা বিষয় তুলে ধরেছি।’
তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের গেট থেকে ৫০জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নরসিংদীতে গায়েবি মামলা হয়েছে। আমরা এই মামলার ব্যাপারে কথা বলেছি। তিনি (আইজিপি) দেখবেন বলেছেন।’
সমাবেশ ঘিরে কী আলোচনা হলো? জানতে চাইলে বুলু বলেন, ‘বৈঠকে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে তারা (পুলিশ) কথা বলেছেন। আমরা বলেছি, আমরা সমাবেশ পল্টনে করতে চাই। পুলিশ বলছেন, আপনারা সোহরাওয়ার্দীতে করেন। আমরা স্থান নির্ধারণ নিয়ে আমাদের স্ট্যান্ড জানিয়েছি।’
পুলিশের গুলিতে সাতজন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সময় আপনারা দাবি করেছেন, আজ এ নিয়ে কোনো আলোচনা করেছেন কি না? জানতে চাইলে বুলু বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে জানিয়েছি। হত্যার বিষয়ে তারা তদন্ত করে দেখবেন। কোনো পুলিশ সদস্য যদি বেআইনিভাবে হত্যায় জড়িয়ে থাকেন তবে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।’
গায়েবি মামলার ব্যাপারে আপনারা কিছু জানিয়েছেন কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা গায়েবি মামলার কপি পুলিশ প্রধানকে দিয়েছি। তিনি (আইজিপি) বলেছেন খতিয়ে দেখবেন। আমরা বলে এসেছি, একই মামলায় যুবলীগের নেতা বাদী, পুলিশও বাদী। এটা তো হয় না। এটাই তো প্রমাণ করে গায়েবি মামলা।’
বিএনপির নামে স্লোগান দিয়ে ককটেল ফোটানোর অভিযোগ করেছেন। আপনারা বলছেন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবেন। কিন্তু এই সমাবেশ কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করেন কি না জানতে চাইলে বুলু বলেন, ‘আমরা খুব শান্তিপূর্ণভাবেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা সারাদেশে আটটি সমাবেশ করেছি। কোথাও কোনো সহিংসতা হয়নি। রাজশাহীতেও হবে না, ঢাকাতেও হবে না। আমাদের তরফ থেকে তো হবেই না। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা করছি না। তবে এর বাইরে অন্য কেউ যদি নাশকতা করে বা করার চেষ্টা করে সেটা পুলিশ দেখবে। সেটা তাদের দায়িত্ব। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিরই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমরা বলেছি, আওয়ামী লীগ সরকার আমাদেরকে পুলিশের প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করছে। আমরা আসলে পুলিশের প্রতিপক্ষ না। আস্থার সংকট হচ্ছে মূল। যা নির্ভর করছে সরকারের মানসিকতার ওপর।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এআইজি মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে বর্তমান প্রেক্ষাপট, মামলা, সমাবেশসহ বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। স্মরকিলিপিতে উল্লেখিত বিষয়ের যা যা খতিয়ে দেখার দরকার, সহযোগিতা করা দরকার তাই করা হবে বলে বিএনপি প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন আইজিপি।’
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) ২৬ শর্তে বিএনপিকে ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় ডিএমপি।
সারাবাংলা/ইউজে/ইআ