Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে খাস জমি দখলের অভিযোগ

লোকাল করেসপন্ডেন্ট
২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:১২

ছগির খান

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর জেলার কলাপাড়া উপজেলায় নদী তীর লাগোয়া দুই একর খাস জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ছগির খানের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) মহিপুর ইউনিয়নের নিজাপুর গ্রামে বেড়িবাঁধের বাইরে দলবল নিয়ে ওই জমি দখল করে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। এ সময় স্থানীয় শুটকি মাছ প্রক্রিয়াজাতকারী শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে ওই জমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ একাধিক জেলের।

বিজ্ঞাপন

পটুয়াখালী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পদ পাওয়ার পর থেকেই ছগির খান মহিপুর এলাকায় শালিস বাণিজ্য থেকে শুরু করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠর নেতাদের।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, প্রায় দুই যুগ ধরে শীত মৌসুমে নদী লাগোয়া ওই জমিতে শুটকি প্রক্রিয়াজাত করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন শতাধিক মৎস্যজীবী। গতকাল বৃহস্পতিবার ছগির খানের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল ওই জমিতে গিয়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের শুকটি শুকানোর অনেক জাল ছিঁড়ে ফেলা হয়। ওই সাইবোর্ডে লেখা রয়েছে, ক্রয় সূত্রে জমির মালিক মো. ছগির খান। নিজামুপর মৌজা, জে এল নং- ২৫, এস এ খতিয়ান নং- ৩০৪, দাগ নং- ২৮,৫০। জমির পরিমাণ- ২.০০ একর। তবে ওই জমি সরকারি বলে দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় শুটকি ব্যবসায়ী হান্নান মিয়া বলেন, ‘এ জমিটা মূলত আমাদের রেকর্ড করা জমির পাশে। প্রায় ২০ বছর যাবৎ আমরা ওই জমিতে মাছ শুকিয়ে শুটকি বানিয়ে আয় করছি। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। তাতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি।’

ছবি: সারাবাংলা

ছবি: সারাবাংলা

একই এলাকার দেলোয়ার মিয়া বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর পর্যন্ত জেনে আসছি এটা সরকারি ১ নং খাস খতিয়ানের জমি। কিন্তু কীভাবে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন, সেটাই বুঝতে পারছি না। আসলে মনে হয়- জোর যার মুল্লক তার।‘

মহিপুর থানা স্বেচ্ছাসেবলীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল মিয়া বলেন, ‘ছগির খানের কর্মকাণ্ডে আমরা বিব্রত। তার কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।‘

মহিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফেরদৌস হাওলাদার বলেন, ‘ছগির খান জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি হওয়ার পরই জমি দখল ও সাধারণ মানুষদের হুমকি ধামকিসহ নানা অপকর্ম করে আসছে। আমরা ছোট থেকে জানি নিজাপুর খেয়াঘাট সংলগ্ন জায়গাটি ১নং খাস খতিয়ানের জায়গা। ওখানে গরিব জেলেরা মাছ শুকিয়ে শুটকি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু গতকাল স্থনীয়দের মাধ্যমে শুনলাম সে নাকি ওই জায়গা দখলে নিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি ছগির খান বলেন, ‘১৯৫২ সালে তরিবুল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে বন্দোবস্ত দেয় সরকার। আমি তার কাছ থেকে ক্রয় করেছি। আমি কোনো সরকারি জমি দখল করিনি।’

মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার রফিক মিয়া বলেন, ‘ওই জমি নিজামপুর মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের ৩, ৪ ও ৫ নম্বর দাগের খাস জমি। ওই জমি দখলমুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘এ বিষয়ে তহসিলদারকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

সারাবাংলা/এনএস

খাস জমি দখল ছগির খান পটুয়াখালী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর