পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের তাগিদ জনসংহতি সমিতির
২ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৫৬
রাঙ্গামাটি: সরকারকে আলোচনায় বসে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। তিনি বলেছেন, ‘সরকার যাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে তাদের সঙ্গে বসতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। আজকে পাহাড়ে অস্ত্রের কথা বলা হচ্ছে, আমরা ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রতিটি অস্ত্র ও গুলি জমা দেওয়ার পর ইউপিডিএফ’র কর্মীরা পার্বত্য অঞ্চলের বাইরে থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে চুক্তির পরে লোকজনের ওপর হামলা চালায়। তখন চুক্তির পরে মানুষ আত্মরক্ষায় অস্ত্র হাতে নিতে হয়। তার মানে এই নয় জনসংহতি সমিতির সদস্যদের কাছে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে।’
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাঙ্গামাটির কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম মাঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জেএসএস রাঙ্গামাটি জেলা কমিটি আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ঊষাতন তালুকদার। একইসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও জুমস্বার্থ পরিপন্থী সকল কার্যক্রম প্রতিরোধ ও চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষে সকলকে আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা অর্থনৈতিক নয়, এটি রাজনৈতিক সমস্যা। এই সমস্যাকে রাজনৈতিকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সমাধান করতে হবে। কেন জানি দেখা যাচ্ছে, শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানে পথ খোঁজা হচ্ছে।’
গণসমাবেশে জনসংহতি সমিতি জেলা কমিটির সভাপতি গঙ্গা মানিক চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেএসএস’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার। এতে আরও বক্তব্য রাখেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, এমএন লারমা মোমিরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেমন চাকমা, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনি চাকমাসহ আরও অনেকে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাহাড়ে ভূমি, আইনশৃঙ্খলা, সাধারণ প্রশাসন এবং আভ্যন্তরীণ ও প্রত্যাগত উদ্বাস্তু শরণার্থী পুনর্বাসন হয়নি। সরকারের মধ্যে একটি অংশের চুক্তি বিরোধিতা করছে। চুক্তি বাস্তবায়নে যত দেরি হবে, দলবাজি ও চাঁদাবাজি তত বাড়বে। নতুন নতুন দলও গজিয়ে উঠবে। ভূমি কমিশনের প্রবিধান না হওয়ায় ভূমি কমিশন কোনো কাজ করতে পারছে না। চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই জুম্ম জনগনকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জনসংহতি সমিতি ছাড়াও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও সেনাবাহিনী রাঙ্গামাটি রিজিয়ন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
সারাবাংলা/এনএস
জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি শান্তি চুক্তি