Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বায়ুদূষণে বাংলাদেশে বছরে মারা যায় ৭৮ থেকে ৮৮ হাজার মানুষ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৫৫

ফাইল ছবি

ঢাকা: উচ্চমাত্রার বায়ু দূষণের কারণে বছরে বাংলাদেশের ৭৮ থেকে ৮৮ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে জিডিপির ক্ষতি হচ্ছে ৩.৯ থেকে ৪.৪ শতাংশ। পাশাপাশি বায়ু দূষণে উল্লেযোগ্যভাবে শ্বাসকষ্ট, কাশি, নিম্ন শ্বাসনালীর সংক্রমণ এবং বিষন্নতার ঝুঁকি বাড়ছে। এছাড়া অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থার ঝুঁকি বাড়ায় পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, বয়স্ক এবং সহজাত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যেমন ডায়াবেটিস, হার্ট বা শ্বাসযন্ত্রের অবস্থা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের একটি নতুন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৪ ডিসেম্বর ) রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এসময় সভাপতিত্ব করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন। অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী এবং স্বাস্থ্য সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের হেলথ স্পেশালিস্ট ওয়ামেগ আজফার রাজাসহ অনেক।

‘ব্রিদিং হেভি: নিউ ইভিডেন্স অন এয়ার পলিউশন অ্যান্ড হেলথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ঢাকা ও সিলেটের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বহিরাঙ্গন বায়ু দূষণের প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যের উপর বায়ু দূষণের প্রভাব কমানোর জন্য, প্রতিবেদনে জনস্বাস্থ্য পরিষেবা এবং প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়ার উন্নতি, বায়ু দূষণের ডেটা মনিটরিং সিস্টেমের উন্নতি, প্রারম্ভিক ওয়েমিং সিস্টেমে বিনিয়োগ এবং আরও গবেষণায় জড়িত করাসহ অবিলম্বে পদক্ষেপের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ঢাকা শহরে বড় নির্মাণ এবং ক্রমাগত যানবাহন চলাচলের এলাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। ঢাকায় বায়ু দূষণের অবস্থা হচ্ছে এয়ার কোয়ালিটি নির্দেশিকা থেকে গড়ে ১৫০ শতাংশ বেশি, যা প্রতিদিন প্রায় ১.৭ শতাংশ ধূমপানের সমতুল্য। মাত্রার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘনত্ব বৃহত্তর ঢাকার ইটভাটার কাছে পাওয়া যায়, যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে ১৩৬ শতাংশ বেশি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইট ভাটাসহ দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় প্রধান নির্মাণ এবং যানজটের কাছাকাছি বসবাসকারী শিশুদের মধ্যে নিম্ন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এছাড়া সিলেট বিভাগ, যেখানে দেশের সবচেয়ে বিশুদ্ধ বায়ু রয়েছে, সেখানেও ডব্লিউএইচও নির্দেশিত জিআই এম ডব্লিউ পিএম-২ ঘনত্বের মাত্রা ৮০ শতাংশ বেশি। এটি প্রতিদিন ১২টি সিগারেট খাওয়ার সমান।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন বলেন ‘বায়ুদূষণ একজন শিশু থেকে বয়স্ক সবাইকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। ২০১৯ সালে বায়ু দূষণ ছিল বাংলাদেশে মৃত্যু ও অক্ষমতার দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে দূষিত বিভাগ ঢাকা এবং সবচেয়ে কম দূষিত সিলেট। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত শহর হিসাবে স্থান পেয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল (খুলনা ও রাজশাহী) পূর্বাঞ্চলের (সিলেট ও​চট্টগ্রাম) চেয়ে বেশি দূষিত। ঢাকা বিভাগে স্থানীয় দূষণ ছাড়াও, মোট পিএমএস ঘনত্বের এক-পঞ্চমাংশ পর্যন্ত আন্তঃসীমান্ত উৎস থেকে আসে।

ডব্লিউএইচও নির্দেশিত মাত্রার তুলনায় পিএমএএসএর সংস্পর্শে এক শতাংশ বৃদ্ধির ফলে একজন ব্যক্তির শ্বাসকষ্টের সম্ভাবনা ১২.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। ভেজা কাশি হওয়ার সম্ভাবনা ১২.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং নিম্ন শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৮.১ শতাংশ বেশি হতে পারে।

বায়ুদূষণ মানসিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে ডব্লিউএইচও নির্দেশিত মাত্রার উপরে পিএম-২এর সংস্পর্শ এক শতাংশ বাড়লেই হতাশাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ বেড়ে যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জরুরি পদক্ষেপগুলোর মধ্যে নিরাময়মূলক যত্ন দেওয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য পরিষেবা প্ল্যাটফর্মের উন্নতি এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রচার অন্তর্ভূক্ত থাকতে হবে। বায়ু মানের ডেটার নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং আরও গবেষণা বায়ু দূষণের স্বাস্থ্যের প্রভাবগুলি মোকাবিলা করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা তৈরি করতে সহায়তা করবে।

সারাবাংলা/জেজে/এমও

উচ্চমাত্রার বায়ু দূষণ বায়ুদূষণ বিশ্বব্যাংক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর