‘আগে যুক্তরাজ্যের ঢং একটু কম ছিল, এখন বাড়ছে বোধ হয়’
৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২৩:৪২
ঢাকা: রাজধানীতে ১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশের কারণে চলাচল, যোগাযোগ ও যানবাহনের গতিবিধি বিঘ্নিত হওয়াসহ রাজনৈতিক সহিংসতা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে যুক্তরাজ্য দূতাবাস। এ কারণে দেশটির নাগরিকদের জন্য পরামর্শ হিসেবে ঢাকায় চলাচলের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে সরকার চিন্তিত নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এজন্য কূটনীতিক পাড়ায় বাড়তি নিরাপত্তার কোনো কারণও দেখছে না বলে জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাজ্য দূতাবাসের এমন সতর্কতা বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যের আগে ঢং একটু কম ছিল, এখন বাড়ছে বোধ হয়। সরকার বার বার পরিবর্তন হচ্ছে তো…।’
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এদিন মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে ড. এ কে এম আবদুল মোমেন বলেন, ‘১০ তারিখের মহাসমাবেশ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি আজ। এগুলো আপনাদের মিডিয়াতেই আলাপ করেন। আর এ নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ ধরণের ঢং-ঢাং আমরা আগেও শুনেছি। দেশের জনগণের সমর্থন না থাকলে এগুলো সব মিনিংলেস।’
এদিন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার শুরুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশে ট্রাভেল এলার্ট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওদের একটা ঢং আছে। কয়দিন পরপর একেক দেশের ওপর তারা ট্রাভেল এলার্ট দেয়। কিন্তু কাউকে আটকায় না। এটা তারা দিয়ে রাখে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে। কারও যদি কিছু হয় তবে তার দায় সরকারের না। আমি যখন ওদের দেশে কাজ করতাম তখন একটা নিয়ম ছিল, কেউ যদি নিখোঁজ হয় বিদেশে তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হোয়াইট হাউজকে জানাতে হয়।’
তবে সাংবাদিকরা এ সময় যুক্তরাজ্য সতর্কতা জারি করেছে উল্লেখ করার পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগে ঢং একটু কম ছিল, এখন বাড়ছে বোধ হয়।’ ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে কূটনৈতিক পাড়ায় বাড়তি নিরাপত্তা দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হবে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘না। আমরা মনে করি না, এটাতে বিরাট কিছু একটা হবে। এটা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত না। এটা মিডিয়া ইস্যু।’
তিনি বলেন, ‘কেউ হুঙ্কার দিলে সবাই কি পালাবে। কোনোভাবেই না। আপনাদের এত শঙ্কা কিসের? শঙ্কার তো কোনো কারণ নাই। আপনি ঠিকই খাওয়া-দাওয়া করতে পারবেন, ঘোরাফেরা করতে পারবেন। দেশে একটা সরকার আছে। সরকারের দায়-দায়িত্ব রয়েছে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার।’
যুক্তরাজ্য দূতাবাসের সতর্কতা বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা আবার জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারে জিজ্ঞেস করেন, আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কেন? সে কি বেসিসে করেছে, তাকে জিজ্ঞেস করেন। তার দেশে ইদানিং বোধ হয় অভাব-টভাব বেশি সে কারণে।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ দূতাবাসের ওয়েবসাইটের ট্রাভেল অ্যাডভাইজরিতে জারি করা এক সতর্কতা বার্তায় বলা হয়, আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে। দিনটিকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতিও বাড়তে পারে।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশে থাকা ব্রিটিশ নাগরিকদের সবধরনের বড় জনসমাগমসহ রাজনৈতিক সমাবেশ এড়িয়ে চলার পরামর্শ জানানো হয় ব্রিটিশ দূতাবাসের ভ্রমণ পরামর্শবিষয়ক ওয়েবসাইটে।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম