আর্জেন্টিনার খেলা উপলক্ষে পার্টিতে সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ৭
৭ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৫১
ভোলা: সদর উপজেলায় বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা উপলক্ষে আয়োজিত নুডুলস পার্টিতে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত একজন নিহত হয়েছেন আর আর আহত হয়েছেন সাত। তারা সবাই আর্জেন্টিনার সমর্থক। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে আটক করেছে এবং নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে নিশ্চিত করেন ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির।
নিহত কলেজ শিক্ষার্থী মোঃ হৃদয় (২১) নিহত হৃদয় সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চেউয়াখালী গ্রামের মো. ইব্রাহীমের ছেলে। তিনি নাজিউর রহমান কলেজের ডিগ্রির শিক্ষার্থী। বুধবার (০৭ ডিসেম্বর) ভোরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে বিশ্বকাপ ফুটবলে আর্জেন্টিনা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ উপলক্ষে সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের চেউয়াখালী গ্রামে নুডলস পার্টির আয়োজন করে নিহত হৃদয়সহ দশ থেকে পনেরোজন আর্জেন্টিনার সমর্থক। পার্টি চলাকালীন বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এ সময় ইয়ামিন নামের এক যুবকের মাথা ফেটে যায়। বিষয়টি তখনই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিলে মীমাংশা করে দেওয়ার কথা বলেন। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে স্থানীয় রুবেলের দোকানের কাছে বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের মোট সাত জন গুরুতর আহত হলে তাদেরকে রাতেই ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতরা হলেন মো. নয়ন (১৭), আব্দুল্লাহ (২৪), মহিউদ্দিন (২৩), লিটন (২২), সাহাবুদ্দিন (২০), মো. আশিক (২০) ও তালহা (২০)। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংঘর্ষ চলাকালে তালহা নামের এক যুবক খুর দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে যার খুরের আঘাতেই সকলে আহত হয়। তবে থানা সূত্রে এটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিহত হৃদয়ের চাচা মো. ইসমাইল জানান, রাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর পুলিশের ধাওয়া খেয়ে হৃদয় তার খালার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে সেখান থেকে রাতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। কিন্তু রাতে সে আর বাড়ি ফেরেনি। ভোর রাতের দিকে স্থানীয়রা ফজরের নামাজ পড়তে উঠলে স্থানীয় মুন্সিবাড়ির পুকুরে ওযু করতে গেলে আহত অবস্থায় হৃদয়কে পুকুরের কিনারায় ভাসতে দেখে বাড়িতে খবর দেয়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রাতে বাড়ি ফেরার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন হৃদয়কে মারধর করে পুকুরে ফেলে দেয় বলে দাবি করছেন তাঁর চাচা ইসমাইল।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এক পক্ষ রাতেই থানায় অভিযোগ দিয়েছে। সকালে হৃদয় নামের এক জনের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় দুই জনকে আটক করা হয়েছে। তবে আটকের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।
সারাবাংলা/আরএফ/