নাইটেঙ্গেল মোড়ের ব্যারিকেড পার হতে পারলেন না ফখরুল
৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৫৭
ঢাকা: বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে কাকরাইল নাইটেঙ্গেল ব্যারিকেডেই আটকে দেওয়া হলো মির্জা ফখরুল আলমগীরকে। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তার গাড়ি নাইটেঙ্গল মোড়ে আসলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে আটিকয়ে দেয়।
এ সময়ে মহাসচিবের সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ছিলেন।
মির্জা ফখরুলে গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের যুগ্ম কমিশনারকে বলেন, ‘আমি আমার পার্টি অফিসে যেতে চাই। এই সময়ে স্যার সম্বোধন করে তিনি বলেন, ‘গতকাল বিকেলে ও রাতে যেভাবে আমাদের পুলিশ সদস্যদের ওপর বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরবর্তীতে সেখানে অভিযান চালিয়ে যে পরিমাণ ককটেল বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি এই মুহুর্তে আমাদের কাছে ঘটনাস্থল যেটিকে আমরা আইনের ভাষায় বলি প্ল্যাইস অব ওকারেন্স। সো এটা আমরা ক্রাইম সিন হিসেবে বিবেচনা করছি। ক্রাইস সিন হিসেবে আমাদের সিআইড, বোমা ডিসপোজাল টিমের সদস্যরা সেখানে কাজ করছে। সো এই মুহুর্তে কেউ সেখানে যেতে পারবে না।
মহাসচিব আবারও প্রশ্ন করেন যে, ‘আমি আমার অফিসে যেতে পারবো কিনা? যুগ্ম কমিশনার বলেন, ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে কেউ এলাউড না। নো বডি এলাউড টু গো। আমি বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে আমার পার্টি অফিসে যেতে পারবো কিনা এটা আপনি বলুন?’ এ রকম প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা আবারও বলেন, ‘আমাদের ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নো বডি ইজ এলাউড টু এন্টার ইন টু দ্য পার্টি অফিস।’
পরে বিএনপি মহাসচিব গাড়িতে উঠে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে চলে যান। সেখানে পল্লবী ৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাস্বেক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেনের মরদেহ দেখেন এবং তার পরিবারকে সাত্বানা দেন।
নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে যাওয়ার আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত গণমাধ্যমের কর্মীদের কাছে বলেন, ‘আমি বিএনপির মহাসচিব। আমাকে আমার পার্টি অফিসে যেতে দেওয়া হলো না এবং তারা যে কথাগুলো বলছে এটা সর্বৈব মিথ্যা। আমাদের ওখানে কোনো বিস্ফোরক ছিলো না। নাথিং ওয়াজ দেয়ার। তারা (পুলিশ) নিজেরা এসব করেছে আপনারা (গণমাধ্যম) তা দেখেছেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে চক্রান্ত ও পরিকল্পনার প্লট বলে বিএনপিকে ম্যালাইন করার জন্য, আমাদের ১০ তারিখের সমাবেশকে পুরোপুরি নস্যাৎ করার জন্য এটা সরকারের হীন পরিকল্পনা-চক্রান্ত। গণতন্ত্রকে ধবংস করার জন্য, মানুষের অধিকারকে ধবংস করবার জন্য আমার রাজনৈতিক অধিকার ধব্বংস করবার জন্য এ সব করা হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমি যদি আমার নিজের অফিসে যেতে না পারি, তাহলে কী করে একজন রাজনৈতিক নেতা কাজ করবে?’
‘একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি তার সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে যে, সে তার স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে। এখন একজন মহাসচিব যদি তার অফিসেই যেতে না পারে তাহলে এটা সম্ভব না। এখানে গণতন্ত্র তো দূরের কথা, এখানে মানুষ একটা সভ্য সমাজে বাস করতে পারছে না। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অফিস খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে বিএনপি অফিসকে খুলে দেওয়ার জন্য আমাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। যাদেরকে গতকাল গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি এবং যে নিহত হয়েছে, শহীদ হয়েছে তার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
শনিবার সমাবেশ হবে
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১০ তারিখের সমাবেশ যেন সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে তার জন্য আমি সরকারের কাছে আহবান জানাচ্ছি। এর দায়-দায়িত্ব থাকবে সরকারে। এখন কোথায় হবে সমাবেশ জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেল, ‘এটা জানিয়েছি। আবার জানাবো।’
সারাবাংলা/এজেড/ইআ