Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেয়ে শিশুদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রত্যয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০০:০১

ঢাকা: মেয়ে শিশুদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন কূটনীতিক, আইনপ্রণেতা ও উন্নয়ন সহযোগীরা। বিষয়টিকে সামনে এনে ও তাদের পাশে থাকার প্রত্যয় নিয়ে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) মানবাধিকার দিবস ২০২২ পালন করেছে। সংসদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধান, জাতিসংঘের প্রতিনিধিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে কিশোরীদের মানবাধিকার নিশ্চিতের প্রশ্নে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সুইডিশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিনডে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অব বাংলাদেশের হেড অব ডেলিগেশন এবং রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলে, ইউএসএইডের মিশন ডিরেক্টর ক্যাথেরিন ডেভিস স্টিভেনস, কানাডিয়ান হাইকমিশনার নাথালি চার্চ, মালদ্বীপের হাইকমিশনার সিরুজিম্যাথ সামির, বৃটিশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর এবং হেড অব গভর্নেন্স ও পলিটিক্যাল টিম, টম বার্জ এই সমর্থন ব্যক্ত করেন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। তিনি বলেন, ‘এমজেএফ মনে করে মেয়েশিশুর মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখার জন্য এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেন শিশু, কিশোরী ও তরুণীরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে এবং বলতে পারে আমরাই করব জয়। এ জন্য প্রয়োজন মেয়েদের সামাজিক ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণ।’

তিনি বলেন, ‘একইসঙ্গে প্রয়োজন সংবেদনশীল সরকার এবং জেন্ডার সমতা নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি সামাজিক কাঠামো। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এমজেএফ সব নেটওয়ার্ক ও সরকারের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবে।’

বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি জীবনে দুই বার রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। প্রথমবার নিল আর্মস্ট্রংদের দেখার জন্য। দ্বিতীয় বার বাংলাদেশের মেয়েরা যেদিন দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরে আসে সেদিন। এখন আমি গর্ব করে বলতে পারি কৃষ্ণা রায়দের দেখার জন্য সেদিন আমি দাঁড়িয়েছিলাম।’

এ বছর জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘সবার জন্য মর্যাদা, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার’- এই লক্ষ্য নিয়েই এমজেএফ ২০ বছর ধরে কাজ করছে। এমজেএফের কাজের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন, মর্যাদা প্রদান, স্বাধীনতা ও বিচারপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা ও তাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা। এই সময়কালে এমজেএফ প্রায় ৪০০’র বেশি সহযোগী সংগঠন, নারী- শিশু ও মানবাধিকার সংগঠন, নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করে ৩০ লাখ দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় করতে পেরেছে।

পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এরোমা দত্ত এমপি, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, বাংলা একাডেমির চেয়ারপারসন বিশিষ্ট লেখিকা সেলিনা হোসেন এবং এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) শেখ মো. মনিরুজ্জামান।

প্রতিবছরের মতো এবছরও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ২০২২’ সামনে রেখে প্রান্তিক পর্যায়ের ছয় তরুণ ব্যক্তিত্বকে মানবাধিকার পদক দিয়ে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচ জন নারী এবং একজন ট্র্যান্সজেন্ডার রয়েছেন। মোট ৬০ জনের ভেতর থেকে তাদের নির্বাচিত করা হয়।

মানবাধিকার পদকজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে দিবসটির সাথে সংহতি প্রকাশ করেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস, ইউএন উম্যানের আঞ্চলিক প্রতিনিধি গীতাঞ্জলী সিং এবং ইউএনএফপি’র আঞ্চলিক প্রতিনিধি ক্রিষ্টিন ব্লকহাস।

এ বছর মানবাধিকার পদক পেয়েছেন পটুয়াখালীর সারমিন আক্তার, গাইবান্ধার উম্মে হাবিবা, ঝিনাইদহ থেকে নজরুল ইসলাম মিঠু, কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে মির্জা ওয়ার্দা বেগ আশফা, সাতক্ষীরার রত্না খাতুন এবং বান্দরবান জেলার পাইংম্রাউ মারমা।

কৈশোর ও তরুণ বয়স থেকেই থেকেই যারা সমাজ রক্ষার আন্দোলনে নাম লিখিয়েছেন, এমন মানুষকেই নির্বাচন করা হয়েছে। এ বছর মানবাধিকার রক্ষা, নারী উন্নয়ন, সমাজসেবামূলক কার্যক্রম ও সমাজের পিছিয়েপড়া মানুষকে উন্নত জীবনের সন্ধান দান করার জন্য তাদের এই সম্মানে ভূষিত করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে এমজেএফও দিবসটি পালন করে আসছে।

তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে, এমজেএফ ‘আমরা দাঁড়াব, আমরা রুখব, আমরাই করব বিশ্বজয়’ এই স্লোগানকে বেছে নিয়েছে মেয়েশিশুর প্রতি অব্যাহত নির্যাতন, নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

মানবাধিকার মেয়ে শিশু

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর