ঢাকা: বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো অনেকটাই ফাঁকা। রাস্তায় গণপরিবহন থাকলেও যাত্রী নেই। ঢাকা থেকে দূর পাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে, আবার ঢুকেছেও। তবে দূরপাল্লার বাসগুলোতেও যাত্রী নেই বললেই চলে। এ পরিস্থিতিতে রিকশা, সিএনজি ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের চালকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তারা জানান, অন্য দিনের তুলনায় ভাড়াই পাচ্ছেন না। পুরো নগরী জুড়ে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল, নাবিস্কো, সাতরাস্তা, মগবাজার, কাকরাইল, মৎস্য ভবন, শাহবাগ ও ফার্মগেট এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মহাখালীতে কথা হলে বৈশাখী পরিবহনের চালক মাইদুল সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তায় যাত্রী নেই। যেকোনো শুক্রবারের চেয়ে আজ লোক কম। ভাড়াই পাচ্ছি না।’

ছবি: সারাবাংলা
আলিফ পরিবহনের সহকারী রুবেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা। অন্য যেকোনো শুক্রবারের চেয়ে রাস্তাঘাটে মানুষ কম। আমরা ভাড়া পাচ্ছি না।’
পাঠাও চালক আনোয়ার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজকে ভাড়া পাচ্ছি না। যাত্রী একেবারেই কম। অন্যদিন দুপুর পর্যন্ত ৯০০ থেকে ১২০০ টাকার ভাড়া মারি। আজকে মাত্র ৩৫০ টাকা ভাড়া মারতে পেরেছি।’
সিএনজি চালক শরীফ সারাবাংলাতে বলেন, ‘রাস্তাঘাটে তো লোকই দেখি না। সকাল ৭টায় গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। দুপুর পর্যন্ত ৩০০ টাকা ভাড়া মারতে পেরেছি। করোনার প্রথম দিকে যেমন লকডাউন ছিল, আজকে মনে হচ্ছে সেই অবস্থা।’
মহাখালী থেকে ছেড়ে যাওয়ার দূরপাল্লার একটি বাসের চালক ইব্রাহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রী একেবারেই নেই। মাত্র একজন যাত্রী নিয়ে বাস ছেড়েছি।’

ছবি: সারাবাংলা
ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কে চলাচল করা সৌখিন পরিবহনের চালক সুজন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে একটি ট্রিপ মেরেছি। ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসার পথেও যাত্রী পাইনি। এখনো যাচ্ছি প্রায় যাত্রী ছাড়াই।’
মহাখালী বাস টার্মিনালে কথা হলে এনা পরিবহনের সহকারী ম্যানেজার (ঢাকা ময়মনসিংহ রোড) এস এম খালেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘অন্যদিনের মতো ভোর ৫টা থেকেই আমাদের বাস চলাচল শুরু হয়েছে। যথানিয়মেই বাস চালাচ্ছি। অন্যদিন যে পরিমাণ গাড়ি ছেড়ে যায়, আজকে তারচেয়ে অনেক কম। যাত্রীদের মুভমেন্ট কিছুটা কম। প্রতিদিন যেখানে ঘণ্টায় ৮টি বাস ছেড়ে যায়, আজ সেখানে ৫ থেকে ৬টি ছেড়ে যাচ্ছে।’
মহাখালীতে কথা হলে রিকশা চালক মঞ্জু সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে এক টাকাও ভাড়া মারতে পারিনি। পকেটে এক টাকাও নেই। দিনে জমা ১২০ টাকা। অথচ এখন দুপুরে কি খাব তা নিয়ে চিন্তাই আছি।’
সেগুনবাগিচায় কথা হলে রিকশাচালক হাশিম বলেন, ‘সকাল থেকে মাত্র ২০০ টাকা ভাড়া মারতে পেরেছি। অন্যদিন এই সময়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করি। নয়াপল্টন এলাকায় যেতেই পারছি না। গুলিস্তানেও আয়ওয়ামী লীগের মিছিল।’