১৩ ও ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে গণমিছিলের ঘোষণা বিএনপির
১০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৪৬
ঢাকা: আগামী ১৩ ও ২৪ ডিসেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশে বিভাগ ও জেলা সদরে গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার বিভাগীয় গণমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীসহ দেশব্যাপী গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি গুলি করে মিরপুর ৫ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক মকবুল আহমেদকে হত্যার প্রতিবাদে ১৩ ডিসেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশে বিভাগ ও জেলা সদরে গণমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি।
‘এছাড়া ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায়ের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ২৪ ডিসেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশে বিভাগ ও জেলা সদরে গণমিছিল, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপ’- বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ১৬ ডিস্বের মহান বিজয় দিবস পালনের পর আমরা ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১০ দফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি শুরু করব। কারণ, আমরা জানি এই সরকার এমনিতে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে না। তাদেরকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।’
এর আগে, সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বাতিলসহ ১০ দফা দাবি ঘোষণা করেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। দাবিগুলো হলো— ১. বর্তমান জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ক্ষমতাসীন সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। ২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ’-এর আলোকে একটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার/অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন।
৩. নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার/অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্ববধায়ক সরকার বর্তমান অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, উক্ত নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের অনিবার্য পূর্বশর্ত হিসাবে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে আরপিও সংশোধন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল ও পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করা।
৪. খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক কারাবন্দিদের অনতিবিলম্বে মুক্তি, দেশে সভা, সমাবেশ ও মত প্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা, সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা বাধা সৃষ্টি না করা, স্বৈরাচারী কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোনো মামলা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করা।
৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সব কালা-কানুন বাতিল করা।
৬. বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও পানিসহ জনসেবা খাতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল।
৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করা।
৮. গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থ পাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ার বাজারসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন/দুর্নীতি চিহ্নিত করে অতি দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা।
১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে সরকারি হস্তক্ষেপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস