মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীকে আইনের আওতায় আনা হবে: আইনমন্ত্রী
১০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৫৯
ঢাকা: আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা ও উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন উঠছে, সেখানেই সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে সরকারের অবস্থান একেবারে পরিষ্কার। বাংলাদেশে যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।’
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রেডিসন হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে মানবাধিকার দিবস- ২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক আরও বলেন, ‘মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের অনেক বড়বড় অর্জন সত্ত্বেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউকেউ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার হীন চেষ্টা করছেন।’
বাংলাদেশের সংবিধান ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের কোথাও অন্যের অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদ ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ২০ অনুচ্ছেদে শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকারের কথা বলা আছে। কিন্তু মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এ দুটি অনন্য দলিলের কোথাও বলা নেই রাস্তাঘাট বন্ধ করে, জনসাধারণের চলাচলের পথ রুন্ধ করে সভা-সমাবেশ করা যাবে।’
দুঃখ প্রকাশ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আজকাল মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা জানার আগেই অনেকে আমাদের মানবাধিকারের বিষয়ে ছবক দিচ্ছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর, ২৬ সেপ্টেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে ঘৃণ্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটলেও মানবাধিকার রক্ষা তো দূরে থাক, এ বিষয়ে একটি টু শব্দও করেন নাই তারা।’
তিনি বলেন, ‘যে বঙ্গবন্ধু তার সারাটা জীবন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলেন, সেই বঙ্গবন্ধুকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে নৃসংসভাবে হত্যা করা হয়, যা ছিল বিশ্বের ইতিহাসে ঘৃণ্যতম ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর বীভৎসতা এত ভয়াবহ ছিল যে, ইনডেমনিটি আইন করে দীর্ঘ ২১ বছর খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। বিশ্বের বড় বড় দেশ খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল। দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন খুনি এখনো কয়েকটি বড় দেশের আশ্রয়ে আছে। তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অনেকটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আনিসুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের সুনীতি ও দৃঢ় অবস্থানের কারণেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জাতীয় চারনেতা হত্যাকাণ্ড ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধসহ বড় বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করা সম্ভব হয়েছে।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মইনুল কবিরসহ আরও অনেকে বক্তৃতা করেন।
সারাবাংলা/জিএস/এনএস