পদ্মা সেতু দিয়ে চলবে নতুন ট্রেন, চীন থেকে এল ১৫ কোচ
১১ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:২০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: পদ্মা সেতুতে রেল চলাচলের জন্য এসেছে ১৫টি নতুন কোচ, যা দিয়ে একটি ট্রেন পরিচালনা সম্ভব। চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের পর কোচগুলো রেলওয়ের নিজস্ব ইয়ার্ডে নেওয়া হয়েছে।
সেতুর ওপর দিয়ে প্রথমদিন থেকেই নতুন কোচ দিয়ে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা আছে রেল কর্তৃপক্ষের। এজন্য চীন থেকে ১০০টি নতুন কোচ কেনা হয়েছে। ২০২৩ সালের জুন থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চালুর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে কোচগুলো আসতে শুরু করেছে।
প্রথম চালানের ১৫টি লাল-সবুজের পতাকার রঙে নির্মিত কোচ নিয়ে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি টয়ো ওয়ার্ল্ড রোববার (১১ ডিসেম্বর) ভোরে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছে। ১২ নম্বর জেটিতে জাহাজ বার্থিং নেওয়ার পর রেলওয়ে কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সেগুলো খালাস করা হয় বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডের (সিজিপিওয়াই) উপ সহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন আজাদ সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, খালাস করা কোচগুলো বিশেষ ওয়াগনে করে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর হালিশহরে সিজিপিওয়াই ইয়ার্ডে। সেখানে যন্ত্রাংশ সংযোজনের পর সেগুলো নেওয়া হবে ঢাকার টঙ্গী এবং নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলের ওয়ার্কশপে। আগামী মাসে ট্রায়াল রানের সম্ভাবনা আছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী তাবাসসুম বিনতে ইসলাম সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, প্রথম চালানে আসা ১৫টি কোচের মধ্যে ২টি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত, ৪টি নন-এসি চেয়ার, ৬টি শোভন চেয়ার, ২টি ডাইনিং ও গার্ড রেক সংযুক্ত কোচ এবং ১টি পাওয়ার কার।
নতুন কোচের আরেকটি চালান জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশে পৌঁছবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় চালানে ১৫ থেকে ২০টি কোচ থাকতে পারে। এর বেশি কোচ খালাস করে ইয়ার্ডে বা ওয়ার্কশপে রাখার সক্ষমতা আমাদের নেই। তবে জুনের আগেই ১০০টি কোচের সবগুলো দেশে পৌঁছবে।’
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১০০টি কোচের মধ্যে ২৫টি নন-এসি চেয়ার কোচ, ৩৫টি এসি চেয়ার কোচ, ১৫টি স্লিপার কোচ, ১৫টি ডাইনিং ও গার্ড রেক সংযুক্ত কোচ এবং ১০টি পাওয়ার কার রয়েছে। প্রতিটি কোচে আসন ১০০টি। আধুনিক এসব কোচে যাত্রীর সংস্পর্শে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে স্লাইডিং ডোর, আবার সময়মতো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হবে। প্রতিটি কোচে আছে গন্তব্যস্থল জানার জন্য মনিটর। এছাড়া সিসি ক্যামেরা, ওয়াইফাই সংযোগ এবং বায়ো টয়লেট আছে।
চলতি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধনের পর দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান আছে।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, আগামী জুনে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের’ উদ্বোধনের পর সেতুর নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। ১৭২ কিলোমিটার এ রেলপথ ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে পৌঁছেছে যশোর। প্রথম ধাপে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
এর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। নতুন করে রেল নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত হবে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা। পাশাপাশি ঢাকা-যশোর-বেনাপোল-কোলকাতা সংযুক্ত হবে উপ-রুটের মাধ্যমে।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস