‘বিএনপির খেলা শেষ, নির্বাচনে ফাইনাল খেলবে আওয়ামী লীগ’
১২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৪৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ১০ ডিসেম্বর বিএনপির খেলা শেষ হয়ে গেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গেছে। জানুয়ারিতে সেমিফাইনাল হবে, সেখানে আমরা (আওয়ামী লীগ) জিতবো। আগামী নির্বাচনে হবে ফাইনাল খেলা। সেই খেলায়ও আমরা জিতবো।’
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে দেয়া ১০ দফা ‘অনেক পুরনো’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘’বিএনপিই নির্বাচনের কফিনে পেরেক ঠুঁকে গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছে। এদেশে সর্বপ্রথম সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের দৃষ্টান্ত রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ। আর কোনো দল করেনি। ক্ষমতা হস্তান্তর করে শেখ হাসিনা যখন গণভবনে যান, তখন দেখেন গণভবনে বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। ১৩ জন সচিবকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এভাবে গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে তারা।’
বিএনপি গণতন্ত্রকে বস্তায় পুরেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে গণতন্ত্র আমরা দেখেছি। এদেশের মানুষ দেখেছে। বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনে বিএনপির ভোট চুরি করার ইতিহাস লিখিত আছে। ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার বিএনপির আমলে হয়েছিল। নির্বাচনের কফিনে বারবার পেরেক ঠুঁকে গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছে বিএনপি।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘মরে ভূত হয়ে গেছে’ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় না, শুধুমাত্র পাকিস্তান ছাড়া। সামনের নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। নির্বাচনে সহায়তা করবে শেখ হাসিনার সরকার। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। আমরা চাই নির্বাচন নিরপেক্ষ হোক, স্বচ্ছ হোক।’
সম্মেলনের উদ্বোধক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে অচল করার পাঁয়তারা করছে। যে হাতে তারা আক্রমণ করবে, সে হাত ভেঙ্গে দিতে হবে। ভেঙ্গে না দিলে কোনো কাজ হবে না। আগামী দিনে এমন পরিস্থিত আসতে পারে, মোকাবেলা করতে হবে। নতুন প্রজম্মকে বিএনপি, জামায়াত, স্বাধীনতা বিরোধীদের চিনতে হবে।’
‘আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি, জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। বিএনপির আমলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃতি করা হয়েছে। যারা যুদ্ধ করেনি তারা খেতাব পেয়েছে। জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেননি। যুদ্ধ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। এই চট্টগ্রাম প্রীতিলতার চট্টগ্রাম, সূর্যসেনের চট্টগ্রাম, মহিউদ্দিন চৌধুরীর চট্টগ্রাম। আমরা কখনো আন্দোলনে পিছিয়ে ছিলাম না।’- বলেন মোশাররফ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘১০ তারিখ সমাবেশ নিয়ে বিএনপি এমন একটা ভাব করছিল, যেন ভয়ঙ্কর কিছু হয়ে যাবে, যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়বে। কিছুই হয়নি, যারা স্বপ্ন দেখেছে তারাই ভেঙ্গে পড়েছে। বিএনপি একটা মিথ্যাচারের দল, ষড়যন্ত্রের দল। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই তারা জনগণকে মিথ্যা বুলি শুনিয়ে রাজনীতি করে আসছে। ক্যান্টনমেন্টে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে এই দল প্রতিষ্ঠা করেছে। যে দলের সৃষ্টিই অবৈধ তারা জনগণের দল হতে পারে না।’
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়ামের মাঠে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। ১৭ বছর পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সারাবাংলা/আইসি/ইআ