‘৬ এমপির পদত্যাগে সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে’
১২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:২২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির দশ দফা দাবিকে ‘দশটি ঘোড়ার ডিম’ বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। দলটির সাংসদদের পদত্যাগে সরকারের ‘একটু কাতুকুতু’ লেগেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে এ সম্মেলন হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার পতনের আন্দোলন করতে গিয়ে ১০ ডিসেম্বর বিএনপি নিজেদের পতন ঘটিয়েছে। ১০ লাখ লোকের জমায়েতের ডাক দিয়ে তারা সমাবেশ করেছে ৫০ হাজার মানুষ নিয়ে। সমাবেশে তারা দিল ১০ দফা দাবি। তাদের দাবিগুলো মনযোগ দিয়ে পড়লাম। দাবিগুলো ঘোড়ার ডিমের মতোই মনে হয়েছে। দশটা ঘোড়ার ডিম, নতুন কিছু সেখানে নেই।’
‘আমাদের ছোটোবেলায় দেখেছি, চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে ভ্যারাইটি শো হতো। মদ, গাঁজা বঙ্গবন্ধু বন্ধ করে দিয়েছিলেন, জিয়াউর রহমান এসে সেগুলো চালু করে দেন। ভ্যারাইটি শো যেদিন হতো, সেদিন মাইকিং হতো আজ ঝুমুর ঝুমুর নাচ হবে। সেই শো-তে যে পরিমাণ লোক হতো, বিএনপির সমাবেশে তার চেয়ে একটু বেশি লোক হয়েছে।’
৫০ হাজার বর্গফুটের গোলাপবাগ মাঠে ১৫ থেকে ২০ হাজার এবং বাইরের রাস্তাঘাটসহ মিলিয়ে ৫০ হাজার লোকের একটি সমাবেশ বিএনপি করেছে বলে তথ্য দেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বিএনপির সাংসদদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সমাবেশে সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসে নিজেরাই পদত্যাগ করে বসলেন। উনারা মনে করেছেন- সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে মনে হয় সরকারের ভিত নড়ে যাবে। আমরা বলতে চাই, সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে, এর বেশি কিছু হয়নি।’
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্যই বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চেয়েছিল অভিযোগ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। অনেক হিসেব-নিকেশ করেই বিএনপি ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন করেছিল। ঘোষণা দিয়েছিল- দশ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। শেষমেষ বিএনপি অফিসের ভেতরে পাওয়া গেল ১৫টি তাজা বোমা, ১৬০ বস্তা চাল, আড়াই লাখ পানির বোতল আর লাঠিসোটা। এর মানে হচ্ছে, বিএনপি আসলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্যই নয়াপল্টনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘বিভিন্নভাবে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ভার্চুয়াল মিডিয়ায় অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এসব মিথ্যাচারের কড়া জবাব দিতে হবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। না হলে ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জোর গতি পাবে।’
সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সারাবাংলা/আইসি/ইআ