চট্টগ্রামে বিএম ডিপোতে ফের অগ্নিকাণ্ড
১৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:১৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে অর্ধশত মৃত্যুর ছয় মাস পর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আবারও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে ওই ডিপোতে আগুন লাগার খবর আসে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। ১০ মিনিটের মধ্যেই কুমিল্লা ফায়ার স্টেশন থেকে দু’টি গাড়ি ডিপোতে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ সারাবাংলাকে জানান, ডিপোর ভেতর পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে স্টিলের কাঠামো দিয়ে তৈরি একটি শেডে আগুন লাগে। ১২ হাজার বর্গফুটের ওই শেডে প্রায় দুই টন পাট এবং পাটের তৈরি সূতা খোলা অবস্থায় ছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটের মধ্যে পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হন।
আগুনে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকার পাট ও পাটের তৈরি সূতা পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্তসাপেক্ষে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত শেডটি ১২ হাজার বর্গফুটের ‘ডেঞ্জারাস গুডসের’ জন্য নতুনভাবে তৈরি বিশেষ শেড বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে, গত ৪ জুন দিবাগত রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর সেখানে কয়েক দফা বিস্ফোরণ ঘটে। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নেভানো হয়। ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে প্রথমে ৪১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া এবং ডিপো পরিষ্কারের সময় বেশ কিছু মানবদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধারের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। আহত হন প্রায় দুই শতাধিক।
দুর্ঘটনার চার মাস পর গত সেপ্টেম্বর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বিএম কনটেইনার ডিপোটিকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন আঙ্গিকে সংস্কার শুরু করে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন অবকাঠামো সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছে। পুরোপুরি সংস্কারের পর সামনের জানুয়ারিতে নতুনভাবে ডিপো চালুর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
দুর্ঘটনার পর থেকে সব ধরনের কনটেইনার ব্যবস্থাপনা বন্ধ ছিল ওই ডিপোতে। গত ২২ অগাস্ট শুধুমাত্র খালি কনটেইনার সংরক্ষণ ও হ্যান্ডলিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয় ডিপো কর্তৃপক্ষকে। তবে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি পণ্যবাহী কনটেইনার ব্যবস্থাপনা বন্ধ ছিল। ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ৯টি শর্তে গত ২৬ অক্টোবর থেকে রফতানি পোশাকের কনটেইনার ব্যবস্থাপনার অনুমতি দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন ২৪ একর জায়গার উপর নির্মিত বিএম ডিপো সর্বশেষ ২০২১ সালে প্রায় ৬০ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। আমদানি কনটেইনার ও খালি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে ২২ হাজার ও ৪০ হাজার টিইইউএস।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস