ভারত সীমান্তবর্তী গয়েশপুরে বিজিবির সহযোগীকে হত্যা
১৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৫৪
চুয়াডাঙ্গা: জেলার জীবননগর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী গয়েশপুর গ্রামে মাদক চোরাচালান সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তারেক হোসেন (৪০) নামে এক মাদকব্যাবসায়ীকে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত তারেক হোসেন একই উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের বড়পুকুর পাড়ার রবগুল হোসেনের ছেলে। বিজিবি তাকে তাদের সহযোগী হিসেবে স্বীকার করেছে।
নিহত তারেকের বাবা রবগুল হোসেন জানান, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার ছেলেকে বাড়ি থেকে কে বা কারা ডেকে নিয়ে যায়। পরে রাত দেড়টার দিকে ভারত সীমান্তবর্তী দোয়াল মাঠ থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকালে তার চিকিৎসা শুরুর আগেই তিনি মারা যান।
গয়েশপুর গ্রামবাসী জানায়, দীর্ঘদিন তারেক বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করছিল। সে কারণে চোরাকারবারীদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। চোরাকারবারীদের সন্ধান জানতে সে ওই সময় ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। সেখানে সে চোরাকারবারীদের সামনে পড়লে তাদের হাতে থাকা ধারাল অস্ত্র দিয়ে তারা তারেককে আঘাত করে। পরে রক্তাক্ত ও আহত অবস্থায় দৌড়ে সে কোন রকম বাংলাদেশের অভ্যান্তরে চলে আসে।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে.কর্নেল শাহীন আজাদ জানান, নিহত তারেক সীমান্তে চোরাচালানবিরোধী কাজে তাদের সহযোগিতা করত। সহযোগিতা অনেকেই করেন। কিন্তু বিষয়টি যারা গোপন রাখতে পারে না তারাই চোরাকারবারীদের রোষানলে পড়ে। ঠিক তেমনটিই ঘটেছে তারেকের ক্ষেত্রে। তবে ‘বিজিবির সোর্স’ কথাটির ব্যাপারে তিনি আপত্তি করেন।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক গয়েশপুর গ্রামের বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে জানান, সোমবার রাত দেড়টার দিকে জীবননগর গয়েশপুর সীমান্তের ৬৮ নম্বর প্রধান খুঁটির কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কয়েকজন মাদককারবারী অবৈধভাবে ভারত থেকে ফেনসিডিল নিয়ে আসার জন্য দাঁড়িয়েছিল। এ সময় তারা ওই স্থানে তারেক হোসেনকে দেখতে পেয়ে তাদের হাতে থাকা ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ওই রাতেই জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এখানে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ওসি বলেন, ‘নিহত তারেক হোসেন বিজিবির চোরাচালান বিরোধী কাজের সহযোগী ছিলেন বলে জানা গেছে। এই হত্যাকাণ্ডের পর এখনও কোনো মামলা দায়ের হয়নি। মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।’
সারাবাংলা/পিটিএম