বিএনপির কাছে ক্ষমতা হচ্ছে লুটের সুযোগ: প্রধানমন্ত্রী
১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:২০
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলেই নির্বাচন নিয়ে, মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এটাই তাদের চরিত্র। কারণ ওরা তো গণমানুষের দল না। ওরা মানুষকে পরোয়া করে না। ক্ষমতা ওদের কাছে ভোগের বস্তু, লুটের সুযোগ, লুটের মাল।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াত দুঃশাসনের সময় রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের সাহসী ভূমিকার প্রশংসাও করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ওই সময়ে চরম অত্যাচার ছিল। মেয়েদেরও ওরা ছাড়েনি। একদিকে পুলিশ বাহিনী আরেকদিকে ছাত্রদল ও বিএনপির গুন্ডাবাহিনী। অকথ্য নির্যাতন করেছে আমাদের মেয়েদের উপর। তারা যেভাবে নির্যাতন করেছিল তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। আমরা কিন্তু তাদের কিছুই করিনি। প্রতিশোধ নিতে যাইনি। দেশের উন্নয়নে মনোযোগ দিয়েছি। বিএনপি মানেই হচ্ছে অত্যাচার-নির্যাতন, দুঃশাসন, লুটপাট, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও বাংলা ভাই সৃষ্টি করা।’
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির জয় প্রাপ্ত আসনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে? ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি? জাতীয় ও আন্তর্জাতিক— কোনোভাবেই কি ওই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে? প্রশ্ন উঠে নাই, কারণ নির্বাচনের ফলাফলটা কি ছিল? নির্বাচনের ফলাফল অনেকে ভুলে গেছে। সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের নির্বাচনে বিএনপি তখন কয়টা আসন পেয়েছিল? বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করলেও মনে হয় ভুলেই গেছে। মাত্র ৩০টা আসন পেয়েছিল বিএনপি। আর জাতীয় পার্টি পায় ২৭ টি। ৩টা আসন বেশি পেয়েছিল বলেই খালেদা জিয়া বিরোধী দলীয় নেতা হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। জাতীয় পার্টি যদি আর ৩-৪টা আসন পেত তাহলে খালেদা জিয়া তখনই বিরোধী দলীয় নেতা হতে পারতেন না, এটাই হলো বাস্তবতা।’
নির্বাচন প্রতিরোধে ২০১৩-২০১৪-২০১৫ অবধি সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপির জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের চিত্রও তুলে ধরেন তিনি।
১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসে জনগণের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল— এ প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা (বিএনপি) ক্ষমতায় গেলেই নির্বাচন ও মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বিএনপির চরিত্র। তার কারণ একটাই, ওরা তো গণমানুষের দল না। ওরা মানুষকে পরোয়া করে না। ক্ষমতা ওদের কাছে ভোগের বস্তু, লুটের সুযোগ, লুটের মাল। আর বাংলাদেশের মানুষ তাদের কাছে কিছুই না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ তাদের কাছে কিছুই না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে গড়া সংগঠন আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই এসেছে স্বাধীনতা, এটা দেশের মানুষ জানে। তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়।’
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) যুব মহিলা লীগের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১২টার পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সম্মেলনস্থলে আসার পর সংগঠনের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলকে সঙ্গে নিয়ে পতাকা স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় জাতীয় সংগীত বেজে ওঠে এবং দলীয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পর সম্মেলনের বক্তাতা পর্ব শুরু হয়।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নাজমা আক্তার এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
পরে নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সহ-সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানার নাম ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন।
সারবাংলা/এনআর/এনএস