কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে: খসরু
১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:৪৭
ঢাকা: ছাত্রদল নেতা নিখোঁজ সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় গিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের লোকজনের তোপের মুখে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এখন দেখা যাচ্ছে, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশে।’
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের কাছ তিনি এ উদ্বেগের কথা জানান।
আমির খসরু বলেন, ‘এটা গভীর উদ্বেগের বিষয়। একজন কূটনীতিক একটা বিশেষ অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। সেখানে যাওয়ার পরে সরকারি দলের মদদে কিছু লোক আরেক প্রতিষ্ঠানের নাম নিয়ে উপস্থিত হয়, যা আইন বিরোধী। কেউ যদি তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠান করতে চায়, ফ্রিডম আছে করতে পারে। কিন্তু আরেকটা অনুষ্ঠান গিয়ে সেই অনুষ্ঠানকে বাধাগ্রস্থ করার যে প্রক্রিয়া এবং সেটাকে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া— এটা অগণতান্ত্রিক। এটা এই প্রথম নয়, আমরা আগেও এরকম ঘটনা দেখেছি। কিছু হয়নি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘অতীতে অ্যাম্বেসেডর মার্শা বার্ণিকাটের ওপর আক্রমণ হয়েছিল, তাদের তো কোনো শাস্তি হয়নি। সেখানেও বোঝা গেছে সরকারের উদ্দেশ্য কি? এর পেছনে কারা আছে? এটা সরকার প্রমাণ করছে, তাদের কথা-বার্তা ও অ্যাকশনে প্রমাণ করছে যে, এখানে তাদের মদদ আছে, সহযোগিতা আছে।’
‘তারা (সরকার) চাচ্ছে এ ধরনের ঘটনা ঘটুক। এর মাধ্যমে একটা ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হোক। দেশের মানুষকে যেভাবে তারা (সরকার) ভয়ভীতির মাধ্যমে চেপে রাখতে চাচ্ছে। এখন কূটনীতিদেরও তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে এই দখলদার সরকার অব্যাহতভাবে ক্ষমতায় থাকার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে, এটা তাই প্রমাণ করে’— বলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের মনে থাকার কথা, মানবাধিকারের অনুষ্ঠান করেছিলাম একটি হোটেলে। সেখানেও তারা ‘মায়ের কান্না’ নামে সংগঠনের লোকজনকে হোটেলের বাইরে অবস্থান করিয়ে অনুষ্ঠানটি বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করেছে। এভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে তা বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা হচ্ছে সরকারি মদদে— এটা আওয়ামী লীগের চরিত্রে পরিণত হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ আমীর খসরু বলেন, ‘এই দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। তাদের সঙ্গে আমাদের বড় বাণিজ্য আছে, বহুবিধ সুসম্পর্ক আছে। তাদের সঙ্গে সুম্পর্কটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু এই একটি রাষ্ট্র নয়, অনেক দেশের সঙ্গে আমাদের বহুবিধ সম্পর্ক আছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আর বলা হচ্ছে, তাদের বলা হয়নি। তার মানে এটার অর্থ এই যে, সরকারকে না বলে কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়া যাবে না। এটা কোথায় আছে? তাদের যদি বলা না হয় দুইদিন ধরে সেখানে (শাহিনবাগ) পুলিশের ঘুরাঘুরি হচ্ছে। আর অ্যাম্বেসেডরের সঙ্গে তো পুলিশের বহর আছে। সরকার অবগত আছে।’
আমির খসরু বলেন, ‘দেশের মানুষের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তাহলে এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সেই দেশের সত্যিকার চরিত্র তাদের সামনে প্রতিফলন ঘটেছে। যেভাবে ঘটনাটা ঘটছে তাতে পরিষ্কার যে, সরকারের মদদ ও সহযোগিতায় এটা ঘটনা ঘটেছে। এটা সরকারের মন্ত্রীদের কথা-বার্তায় পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। তাদের মদদ ব্যতিত এই ধরনের কর্মকাণ্ড সম্ভব নয়।’
সারাবাংলা/এজেড/এনএস