নিজের র্যালি থামিয়ে বিএনপিকে এগিয়ে দিলেন নওফেল
১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:১৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে বিজয় দিবস উপলক্ষে বের করা দু’টি পৃথক র্যালিতে মুখোমুখি হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। পাল্টাপাল্টি স্লোগানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। পুলিশ যখন উভয়পক্ষকে সামলাতে হিমশিম, তখন একটি র্যালির নেতৃত্বদাতা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল হস্তক্ষেপ করলেন। আওয়ামী লীগের র্যালির গতিরোধ করে উপমন্ত্রী পুলিশের সঙ্গে দাঁড়িয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্বিঘ্নে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। এর মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির অবসান ঘটে।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর কোতোয়ালি থানার লাভ লেইন মোড়ে উভয় র্যালি মুখোমুখি হয়েছিল, যাতে উভয়পক্ষের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ছিল।
সকাল ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পরিষদ’ নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে বিজয়শিখা চত্বর থেকে র্যালি বের করে, যাতে নেতৃত্ব দেন পরিষদের চেয়ারম্যান উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। র্যালির রুট ছিল- হোটেল রেডিসনের সামনে থেকে কাজির দেউড়ি, জামালখান, চেরাগি পাহাড়, বৌদ্ধমন্দির, আবেদিন কলোনি, লাভ লেইনের সামনে দিয়ে সিআরবির সামনে দিয়ে বিজয়শিখা চত্বর পর্যন্ত।
অন্যদিকে, সাড়ে ১১টার দিকে বিজয়শিখা চত্বর থেকে আনুমানিক ৩০ গজ দূরে নুর আহমদ সড়কের নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয় থেকে বিজয় র্যালি বের করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, যাতে নেতৃত্ব দেন সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর। র্যালির রুট ছিল- নাসিমন ভবন থেকে লাভ লেইন, এনায়েত বাজার মোড়, তিন পোলের মাথা, আমতল হয়ে মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলের অস্থায়ী শহিদ মিনার।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘উপমন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে মিছিল বৌদ্ধমন্দির থেকে লাভ লেইনের মোড়ে আসে। ঠিক একই সময়ে বিএনপির র্যালি লাভ লেইন অতিক্রম করছিল। একেবারে মুখোমুখি। আকস্মিকভাবে দুই দলের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি হয়ে গেলে যা হয়, এক্ষেত্রেও সেরকম পরিস্থিতির সম্ভাবনা ছিল। আমরাও সতর্ক ছিলাম। কিন্তু উপমন্ত্রী মহোদয় নিজেই উনাদের র্যালি থামিয়ে দেন। বিএনপিকে র্যালি নিয়ে এগিয়ে যাবার জন্য মাইকে আহ্বান জানান।’
বিএনপির নেতাকর্মীরা লাভ লেইন মোড় অতিক্রম করে চলে যাওয়ার পর উপমন্ত্রী নওফেল র্যালি নিয়ে এগিয়ে যান বলে জানান ওসি জাহিদুল কবীর।
জানতে চাইলে নগর বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইদ্রিস আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা নাসিমন ভবন থেকে বের হয়ে লাভ লেইন মোড়ের দিকে যাবার সময় মেট্রোপলিটন ক্লাবের সামনে পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। ততক্ষণে আওয়ামী লীগের লোকজন একেবারে আমাদের কাছাকাছি এসে যায়। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম উনাদের র্যালি থেমে গেছে, সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। আর আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তখন আমরা র্যালি নিয়ে শহিদ মিনারে চলে যাই।’
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের এমপি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমরা সবসময় সহাবস্থানের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ কখনোই প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। চট্টগ্রামে কখনোই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে আমরা হস্তক্ষেপ করি না, বরং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সহায়তা করি। একইভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদেরও আহ্বান থাকবে জ্বালাও-পোড়াও, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের মতো ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে কেউ যেন সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্ট না করেন।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম