Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিজয়ের প্রত্যয়ে অপশক্তি মোকাবিলার অঙ্গীকার আ.লীগের শোভাযাত্রায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ২৩:৪২

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজপথে সরকারবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে আওয়ামী লীগ। আর এর মধ্য দিয়ে অব্যাহত অগ্রযাত্রা বিজয়ের বন্দরের পৌঁছাবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) আয়োজিত শোভাযাত্রায় এ প্রত্যয়ের কথা জানান তারা।

রাজপথে ১০ ডিসেম্বর বিএনপির পরাজয়ের ধারাবাহিকতায় তারা আগামী নির্বাচনেও পরাজিত হবে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনেও নৌকার বিজয় বিজয় সূচিত হবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস আওয়ামী লীগে নেতাদের। এ লক্ষ্যে নেতাকর্মীদের অতীতের ন্যায় আগামীতেও রাজপথে অপশক্তি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার দুপুরে রাজধানীতে বিজয় শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে রাজপথ দখলে রেখে আগামী নির্বাচনেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা। শোভাযাত্রা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে।

বিজয় দিবসের শোভাযাত্রাকে সফল করার লক্ষ্যে দুপুর ১২টার পর মহানগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। রমনার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি)’র গেটের সামনে দুটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চে শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির নেতারা। লাখ লাখ নেতাকর্মীদের উপিস্থিতিতে বিজয় শোভাযাত্রাটি আইইবি’র সামনে থেকে শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড হয়ে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ব্যান্ড পার্টি, পিকআপ, ছোট ছোট ট্রাকে করে উৎসব-আনন্দমুখর পরিবেশে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শত শত পিকআপ, ছোট ট্রাক, ঘোড়ার গাড়ির কারণে শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবনমুখী একপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন সড়কে যানজট ও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এবারও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন বিজয় শোভাযাত্রা হয়। বিজয় শোভাযাত্রায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

বিজয় শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ঢাক মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আফজাল হোসেন, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

খেলা হবে স্লোগান দিয়ে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘খুনিদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খুনিদের আমরা পরাজিত করব। তারা পরাজিত হবে। এই অপশক্তিকে আমাদের রুখতে হবে।’ নেতাকর্মীদের আগামীতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আন্দোলনেও খেলবে, নির্বাচনেও খেলবে। সেমিফাইনাল সামনে, তারপর ফাইনাল খেলা। ফাইনাল আন্দোলনেও তারা হারবে, নির্বাচনেও তারা হারবে ইনশাআল্লাহ।’ তিনি আরও বলেন, ‘খেলা হবে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে। লুটপাটের বিরুদ্ধে। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে। একাত্তরের খুনি, পঁচাত্তরের খুনি, ২১ আগস্টের খুনি, ৩ নভেম্বরের খুনিদের বিরুদ্ধে। খুনিদের রক্ষা নেই, রুখবে এবার বাংলাদশ আওয়ামী লীগ। এই অপশক্তিকে রুখতে হবে, শপথ নিন।’

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমাদের স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে যাবে যদি আমরা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার ব্যবস্থা করতে না পারি। অনেক সময় বয়ে গেছে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রান্তের কারণে। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অন্নের নিশ্চয়তা দিয়েছি, বস্ত্রের নিশ্চিয়তা দিয়েছি, খাদ্যের নিশ্চয়তা দিয়েছি, চিকিৎসার নিশ্চয়তা দিয়েছি, বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়েছি। তাই বাঙালি জাতি সামনের দিকে জাতির পিতার কন্যার নেতৃত্বেই এগিয়ে যাবে।’

ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না দাবি করে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হলে আওয়ামী লীগের শিকড় তৃণমূলে আঘাত করতে হবে। সেটিও হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। কোনো ষড়যন্ত্র কোনো সন্ত্রাসের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। আগমাীতে যখন নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে যদি জনগণ ভোট না দেয় আমরা সালাম করে চলে যাব।’

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বিজয়ের মাস যখনই আসে তখন একাত্তরের পরাজিত শক্তির মাথা গরম হয়ে যায়। ওদের রক্ত গরম হয়ে যায়। ওই রক্তপিপাসু হায়েনারা তখন প্রতিশোধী মন নিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে ষড়যন্ত্র করে। চলমান অগ্রগতি-উন্নয়ন-শান্তি বিঘ্নিত করে বাংলাদেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় বিএনপি-জামায়াত শক্তি। লন্ডনে বসে তারেক রহমান এই দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়।’

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

আওয়ামী লীগ বিজয় শোভাযাত্রা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর