কমেছে লঘুচাপের প্রভাব, আসছে জোড়া শৈত্যপ্রবাহ
১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৩৭
ঢাকা: নিম্নচাপের কারণে ডিসেম্বরের শুরুতে বাধা পেয়েছিলো উত্তরের হিমেল হাওয়া। যে কারণে শীতের তীব্রতা টের পাওয়া যায়নি। মধ্য ডিসেম্বরে সেই আমেজ অনুভব হচ্ছে। তাপমাত্রা পারদ নেমেছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যদি গত দুই দিনের চেয়ে তাপমাত্রা বেড়েছে। তারপরেও গ্রাম-গঞ্জে জেঁকে বসেছে শীত। শহরেও চলে এসেছে শীতের আমেজ।
আবহাওয়া অধিদফত জানিয়েছে, ধীরে ধীরে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে ডিসেম্বরের শেষে আসছে দু’টি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ওই সময়ে তাপমাত্রা নামতে পারে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এদিকে বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে তা স্থমিত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তিন মাসের আগাম পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে এসকল তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দেওয়া পূর্বাভাস প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত কম হতে পারে। বঙ্গোপসাগরে দু’টি লঘুচাপের কথা বলা হয়েছে। এর প্রভাব কেটে যেতেই ধীরে ধীরে রাত ও দিনের তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। চলতি ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে দেশের কোথাও কোথাও দু’টি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এরমধ্যে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা নেমে যাবে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আরেকটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এসময় তাপমাত্রা নেমে আসবে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আরও বলা হয়, এ মাসে দেশের নদ-নদীর অববাহিকায় শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকবে। তবে নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজ করবে। এ সময় কৃষিতে দৈনিক গড় বাষ্পিভবন থাকতে পারে ২.৫০ থেকে ২.৫০ মিলিমিটার এবং গড় উজ্জল সূর্যকিরণ থাকতে পারে ৪.৩০ থেকে ৬.৩০ ঘণ্টা।
এছাড়া আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে পূর্বাভাসে। তিনটির মধ্যে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের সময় তাপমাত্রা নেমে যাবে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সময় তাপমাত্রা নেমে যাবে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আর তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে একটি। ওই সময়ে তাপমাত্রা নামবে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এসময় দেশের উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল, উত্তর পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের নদ- নদী অববাহিকায় ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকবে। জানুয়ারি মাস জুড়ে তীব্র শীত থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ মাসের শুরুর দিকে দুই একটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। কিন্তু শেষ দিকে শীলাবৃষ্টির সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বজ্রঝড় হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে।
এদিকে আবহাওয়ার নিয়মিত মৌসুমী প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে ঘন কুয়াশা পরতে পারে। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, এসময় দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকলেও সামান্য বাড়তে পারে রাতে। আগামী দুই একদিনে এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে না।
তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকার কারণ হিসেবে উল্লেখ তিনি করেছেন, বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর বাড়তি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। ফলে উত্তর দিক থেকে আসা বাতাস যা শীতের সৃষ্টি করে তা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ডিমলায় ১২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা টেকনাফে ৩১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় দেশের কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি।
সারাবাংলা/জেআর/এমও