Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজশাহী মুক্ত দিবস আজ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:০৫

রাজশাহী: এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর এসেছিল বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল বিজয়। পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের এই দেশে উদিত হয়েছিল নতুন সূর্য। দীর্ঘ নয় মাসের মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে। কিন্তু, সেদিন রাজশাহীর আকাশে উড়েনি বিজয়ের পতাকা। বিজয়ের দুই দিন পর উড়েছিল স্বাধীন দেশের পতাকা।

১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় রাজশাহী। পাকিস্তানি বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করলেও রাজশাহীতে রাজাকারদের আধিপত্য ছিল। বেতারে আসা আত্মসমর্পণের খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে রাজাকাররা। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যুদ্ধও চলতে থাকে। দুই দিন পর ১৮ ডিসেম্বর রাজশাহী শত্রুমুক্ত হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা এমন তথ্যই জানিয়েছেন।

বিজয়ের আগের দিন ১৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী ঢুকেছিল সাত জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল। এই দলে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান। তিনি বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজশাহী পৌঁছান। রাতে রাজশাহী কলেজের কলা ভবনে থাকেন। ১৬ ডিসেম্বর বোয়ালিয়া ক্লাব, সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা হল, উপশহরের বেশকিছু ক্যাম্পে অভিযান চালান মুক্তিযোদ্ধারা।’

তিনি বলেন, ‘আত্মসমর্পণের খবরকে গুজব বলে রাজশাহীতে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করেছিল রাজাকাররা। তবে সেদিনই মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযানে জোহা হলে আটকে রাখা সবাই মুক্ত হয়ে যান। ১৬ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহী শত্রুমুক্ত হতে থাকে। ১৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে রাজশাহী শত্রুমুক্ত হয়।’

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযুদ্ধকালীন ৭ নম্বর সেক্টরের অধীন রাজশাহী চার নম্বর সাব-সেক্টরের গেরিলা লিডার ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান রাজা।

তিনি জানান, ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের খবরের পরই মুক্তিযোদ্ধাসহ সর্বস্তরের মানুষ রাজশাহীর রাজপথে নেমে জয় বাংলা স্লোগানে মেতে ওঠেন। ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে ঢুকতে থাকেন। তবে তখনও পাক হানাদার বাহিনী রাজশাহী ছেড়ে যেতে পারেনি। ফলে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতে থাকে। দুই একজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানি ক্যাম্পগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ১৭ ডিসেম্বর অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজশাহী শহরে পৌঁছে যান। এরপর ১৮ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরীর মাদরাসা মাঠে সাত নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর গিয়াস উদ্দীন স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে রাজশাহীকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন।

সেদিন হাজার হাজার মানুষ ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানে সমবেত হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বরণ করে নেন।

সারাবাংলা/এমও

মুক্ত দিবস রাজশাহী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর