Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শাহীনবাগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের যাওয়ার তথ্য জানত না মন্ত্রণালয়’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৪৮

ঢাকা: ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস সম্প্রতি এক বিএনপি নেতার বাসায় গিয়েছিলেন। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগ এলাকায় ওই নেতার বোনের বাসায় রাষ্ট্রদূতের যাওয়ার খবর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জানার কথা থাকলেও সেখানে তথ্য দেওয়া হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, তিনিও সে তথ্য জানতেন না। তবে সেখানে তার নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিলো না। পুলিশ বাহিনী যখনই শুনেছেন তখনই সেখানে ছুটে গেছেন বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির ৬ষ্ঠ সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস গত বুধবার সকালে নিখোঁজদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাকের’ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে ঢাকার শাহীনবাগের একটি বাসায় যান। ওই বাসায় ২০১৩ সাল থেকে নিখোঁজ বিএনপি নেতা মাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি থাকেন। তিনি যখন সকালে ওই বাসায় যান তখন সেখানে ‘মায়ের কান্না’ নামে আরেকটি সংগঠনের সদস্যরাও ওই বাসার বাইরে অবস্থান করছিলেন তাকে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য। ‘মায়ের কান্না’ হলো ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর বিদ্রোহ দমনের নামে বিমানবাহিনীর সহস্রাধিক সদস্য গুমের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সংগঠন।

শাহীনবাগের বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের অবস্থান এবং বের হওয়ার পর স্মারকলিপি দেওয়া নিয়ে তখন ওই এলাকায় অস্বাভাবিক ও ধ্বস্তাধস্তির মত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে সেখান থেকে দ্রুত বের করে নিয়ে যান। ওই বাসায় তিনি ২৫ মিনিট অবস্থান করেন। বের হয়ে যাওয়ার পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জরুরি ভিত্তিতে পরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করে তিনি তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান।

তেজগাঁও তেজকুনি পাড়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের যাওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জব্বার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিষয়টি নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুন্দরভাবে ব্যাখা করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমার নির্বাচনী এলাকা। আমি সে এলাকার এমপি। আমি যতটুকু খবর পেয়েছি সেখানে দেখা গেছে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত যে বাড়িতে গেছেন তার পাশের বাড়ির কয়েকজন তারা কিভাবে জেনেছে আমি জানি না। তাদের কয়েকটি দাবি যেমন, জিয়ার আমলে তাদের নিরপরাধ পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে হত্যা করেছেন সে বিষয়ে তাদের দাবি প্ল্যাকার্ড তার হাতে দিয়েছেন। এটুকু আমি শুনেছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম কথা হলো সেখানে তার নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিলো না। পুলিশ বাহিনী যখনই শুনেছেন তখনই সেখানে ছুটে গেছেন। যখনই শুনেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত সেখানে যাচ্ছেন তখন পুলিশ বাহিনীর কর্তব্য হয়ে গিয়েছিলো সেখানে যাওয়া। আমাদের ওসি সিভিল পোশাকেই চলে গেছে। এখানে তার নিরাপত্তার ঘাটতি হয়েছে বলে আমার কাছে রিপোর্ট আসেনি।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত সেখানে যাচ্ছেন সে তথ্যটা কিভাবে ফাঁস হলো জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেটা জানি না। তারা তো আমাদের কাছে তথ্য দেয়নি। কিভাবে তথ্য ফাঁস হলো, তার অফিস থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে কিনা সেটা আমরা জানি না। আর এটা আমাদের জানার কথা নয়। ওনি সেখানে যাবেন সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জানানর কথা ছিলো৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানে না, আমরাও জানি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুলিশি ব্যবস্থা এতোটাই শক্ত। যে আমাদের প্রতিটা ওয়ার্ডে একটি বিট পুলিশি সিস্টেম রয়েছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ওসি সেখানে চলে গেছেন এবং তার যাতে নিরাপত্তার বিঘ্ন না ঘটে সে ব্যবস্থা তিনি করেছেন।’

কূটনীতিক পুলিশ তো আছে সেক্ষেত্রে এরকম একটি বিষয় কিভাবে হলো জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কূটনীতিক পুলিশ তার সঙ্গে ছিলো। সেখানে কোন ঘটনা ঘটেনি। রাষ্ট্রদূতরা যে এলাকায় থাকেন সেখানে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি তারা যখন বের হন তখনও আমাদের সিকিউরিটি নিয়ে বের হন। চারজন রাষ্ট্রদূতকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়ে থাকে তারমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত একজন। তিনি যখন কোথাও যাওয়া-আসা করেন তখন তার আগেপিছে আমাদের পুলিশ বাহিনী নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। তার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এরকম কথা আমরা কখনও শুনিনি।’

আরও পড়ুন:
‘মায়ের কান্না’য় বিব্রত হাস, মোমেনের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ
জিয়ার আমলে গুমের তদন্ত চেয়ে পিটার হাসের কাছে স্মারকলিপি

সারাবাংলা/জেআর/এমও

মর্কিন রাষ্ট্রদূত শাহীনবাগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর