Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘দেশের মানুষের মাথা নিচু হয় এমন কাজ করিনি, করবও না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৫৮

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের মাথা নিচু হোক, মুখ ছোট হোক, বাংলাদেশ কোথাও লজ্জায় পড়ুক; অন্তত আমি বা আমার পরিবারের কেউ এ ধরনের কাজ করিনি, করবও না। কারণ, আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ‌সুপ্রিম কোর্টের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই আমাদের মতো কেউ যেন আর বিচারহীনতার কষ্ট না পায়। বাবা, মা, ভাই মারা গেল। আমি বিচার চাইতে পারব না? যারা এই কাজ করেছে তাদেরকেই গণতন্ত্রের ধারক-বাহক বলা হয়। এটা সত্যিই জাতির জন্য, দেশের জন্য, স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। এই অবস্থায় যেন বাংলাদেশ আর কোনোদিন না পড়ে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যখন পালন করব ওই সময় বাংলাদেশ অত্যন্ত একটা মর্যাদা নিয়ে উদ্ভাসিত হবে। এইটুকু বলতে পারি, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে অনেকেই এক সময় খুব নিচু চোখে দেখতো। এখন বাংলাদেশকে মর্যাদার চোখে দেখে। এটা ধরে রাখতে হবে। ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আমরা সেই প্রত্যয় নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ডিজিটাল ডিভাইসের যুগ। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ যেন স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে ওঠে। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিচার ব্যবস্থা, সরকারি কার্যক্রম সবক্ষেত্রেই আমরা যেন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে পারি। সবকিছুই যেন আমরা অনলাইনে করতে পারি। যাতে করে কোনো অপচয় না হয়। বাংলাদেশ বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাথা উঁচু করে যেন চলতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের অতিমারির পর যখন কেবল বিশ্ব একটু উঠে আসছে তখন দেখা দিল ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। আমি নিজে যখন জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছি তখনও বলেছি, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। অর্থনৈতিক উন্নতি চাই।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার সরকারের টানা মেয়াদে দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতিসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ ছিল। বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। সেই হারাবার সম্বল নিয়েই কিন্তু এই দেশে এসেছি দেশের মানুষের ভাগ্য পবির্তনের জন্য। এখানে দুর্নীতি করে পয়সা বানাব, নিজের জীবনমান নিয়ে থাকব, এটার জন্য তো আসিনি।’

পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। কানাডার ফেডারেল কোর্ট রায় দিয়েছে এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি। বিশ্বব্যাংকের সব অভিযোগ ভুয়া ও মিথ্যা প্রমাণিত হয়। অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি, দেশের মানুষের মাথা নিচু হোক, মুখ ছোট হোক, বাংলাদেশ কোথাও লজ্জায় পড়ুক; অন্তত আমি বা আমার পরিবারের কেউ এ ধরনের কাজ করিনি, করবও না।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন হবে। মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হবে। বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে।’

অনুষ্ঠানে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা তথা নিম্ন আদালতের বিচারকদের ‌‘প্রধান বিচারপতি পদক’ দেওয়া হয়। আর দলগতভাবে এ পদক পান ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ আদালত। পদকপ্রাপ্তরা প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধান বিচারপ্রতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক, সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মুকেশকুমার রাসিকভাই শাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এছাড়াও বক্তৃতা করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর