ঢাকা: ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাউকে পিছিয়ে রেখে নয়, সবাইকে নিয়ে একযোগে উন্নয়ন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) তেজগাঁওয়ে দৈনিক আমাদের সময়ে আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬: নিরাপদ পানি, স্যনিটেশন ও হাইজিন প্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সব জায়গার উন্নয়ন একসঙ্গে একই গতিতে হবে না। এলাকাভিত্তিক প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে উন্নয়ন কার্যক্রম চালানো হয়। উপকূলীয়, পার্বত্য এবং খরাপ্রবণ এলাকার জন্য ভিন্ন ভিন্নভাবে সমাধান। নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘১২ লাখ মার্কিন ডলার মাথাপিছু আয় (উন্নত বাংলাদেশ) করতে চাইলে কোনো এলাকা বাদ দেওয়া যাচ্ছে না। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাওয়া সরকারের পরিকল্পনা আর সচেতনতায় যুক্ত হয়েছে সাধারণ মানুষের চেষ্টা ও শ্রম। দেশে কৃষিতে উন্নয়ন হয়েছে। স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, শহরের দরিদ্র ও ধনী শ্রেণির জন্য আলাদা পানির দর নির্ধারণ করা যেতে পারে। গুলশান-বনানী অভিজাত এলাকায় পানির দর বেশি এবং বস্তি এলাকায় পানির দর কম করার ব্যবস্থা করতে হবে।’
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন-২৮ এর সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার বলেন, ‘জনসংখ্যার ঘনত্ব অনুযায়ী সুপেয় পানির চাহিদা নির্ধারণ ও বাজেট করা উচিত। দেশ শতভাগ স্যানিটেশনের আওতায়। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যৌথ চেষ্টায় এটি সম্ভব হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা সমস্যা, নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে পরিষ্কার পানির অভাবে। দেড় থেকে দুই কোটি মানুষের বাস ওইসব এলাকায়, যার অর্ধেক নারী। উন্নয়ন পরিকল্পনা করার সময় তাদের কথা মাথায় রাখতে হবে। এসব নারীরা অসুস্থ হলে শ্রমঘণ্টা কমে যাচ্ছে, আবার চিকিৎসা খরচও বাড়ছে। তাই উত্তরবঙ্গের বাজেট যা হবে, তাতে কিন্তু উপকূলীয় অঞ্চলে হবে না। এসব জায়গায় উন্নয়ন ব্যয়ে এসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে।’
সেমিনারে জানা যায় সকলের জন্য নিরাপদ পানীয় প্রাপ্তি ও স্যানিটেশন বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অভীষ্ট-৬’র আলোচ্য বিষয়বস্তু। উপকূলীয় অঞ্চলে ধনী ও মধ্যবিত্তরা নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে পারলেও গরীব মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। বক্তারা এসময় বাজেট বাড়িয়ে ক্লাইমেট চেঞ্জের পাগলাঘোড়াকে মোকাবিলা করা যাবে কি না, সেটি ভেবে দেখতে হবে বলে মন্তব্য করেন।
আমাদের সময় পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে সেমিনারটিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের পরিচালক রিসার্স ফেলো মাহফুজ কবির। এছাড়াও অন্যদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান।