রুয়েটের ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তার কাছে খামভর্তি কাফনের কাপড়
২১ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:১১
রাজশাহী: রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তার কাছে ডাকযোগে কাফনের কাপড়ের দুটি করে টুকরো পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কাছে ডাকের মাধ্যমে এই চিঠি এসেছে।
চিঠিগুলোতে প্রেরকের ঠিকানায় ‘সচেতন নাগরিক সমাজ, রাজশাহী’ লেখা আছে। চিঠির খামের ভেতর কাফনের কাপড় ঢোকানো ছিল। এছাড়া একটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া আছে। তবে মোবাইল নম্বরটি কার তা জানা যায়নি। চিঠি পেয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
চিঠি পাওয়া শিক্ষক-কর্মকর্তারা হলেন- রুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ, রুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ফারুক হোসেন, সহ-সভাপতি ড. জগলুল শাহাদাত, সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রকল্যাণ দফতরের পরিচালক ড. রবিউল আওয়াল, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. সেলিম হোসেন, কম্পট্রোলার নাজিম উদ্দীন আহমেদ, সহকারী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ এবং সেকশন অফিসার রাইসুল ইসলাম রোজ।
বুধবার সন্ধ্যায় রুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীর মতিহার থানায় একটি অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার বাদী হয়েছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ‘চিঠি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মাঝে আতঙ্ক ও ভীতির সঞ্চার ঘটেছে। সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সাদা কাপড়ের টুকরোর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৬ ডিসেম্বর শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিদর্শদন কমিটির সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার যোগসূত্র থাকতে পারে।’
জানা গেছে, ৬ ডিসেম্বর জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন কমিটি রুয়েটের বিভিন্ন দফতর ও শাখা আকস্মিক পরিদর্শন করে। সেদিন পরিষদ শাখায় একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। বিষয়টি কমিটির রেজুলেশন খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়। এতে বলা হয়, কমিটি পরিষদ শাখা পরিদর্শনকালে শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আলরেরুনী ছিলেন না। পরিষদ শাখার সেকশন অফিসার সোহেল রানা মোবাইল ফোনে আলরেরুনীকে পরিদর্শন কমিটির উপস্থিতির বিষয়টি জানান। তিনি অফিসে আসেন।
পরে পরিদর্শন কমিটি প্রধান প্রকৌশলীর অফিসকক্ষে প্রবেশের সময় পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আলবেরুনী পেছন দিক থেকে কমিটির উদ্দেশ্যে উচ্চ স্বরে কটুক্তি করেন। পরিদর্শন কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেন ভদ্রভাবে তাকে ওই স্থান ত্যাগ করতে অনুরোধ জানালে আলবেরুনী কমিটির সদস্যদের সামনে এসে ‘উচ্চস্বরে আপত্তিকর ও বাজে কথা’ বলেন। তিনি ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ অশালীন’ আচরণ করেন এবং কমিটির কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আলরেরুনীকে কল দেওয়া হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এছাড়া রুয়েটের রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনকে একাধিকার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ড. সেলিম হোসেন থানায় এসে অভিযোগ দিয়ে গেছেন। কাফনের কাপড়টা আমিও দেখলাম। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। এরপর আমরা ব্যবস্থা নেব।’
সারাবাংলা/এনএস