ডিএনসিসির কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে লাগবে না ফি
২২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৩৫
ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ দাফনে কোনো ফি লাগবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এছাড়া সিটি করপোরেনের অফিসে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ রাখা ও প্রতিটি ওয়ার্ডে তাদের নামে সড়কের ঘোষণাও দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ অডিটোরিয়ামে ডিএনসিসির আয়োজনে মহান বিজয় দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেবা প্রদানে ডিএনসিসি সবসময় মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। ডিএনসিসি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছি। তাদের সম্মানে কর ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিটি ওয়ার্ডে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়ক হবে। ডিএনসিসির কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ দাফনে কোনো ফি লাগবে না। এছাড়া সিটি করপোরেনের অফিসে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ রাখা থাকবে এবং আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে। সেবা নিতে আসলে তারা সেই কক্ষে বসবেন।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সমগ্র বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। স্বাধীনতার জন্য, লাল-সবুজের পতাকার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সবসময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেন ও তাদের জন্য কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করে সিটি করপোরেশন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাতে প্রতি বছর সংবর্ধনার আয়োজন করছি।’
মেয়র আরও বলেন, ‘ভবিষ্যত প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। আজ উপস্থিত আছেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা, উপস্থিত আছেন মুক্তিযোদ্ধাদের পবিত্র রক্তের উত্তরাধিকারী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। সবাই মিলে দেশটা গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই যেমন যুদ্ধে গিয়েছিল, ঠিক তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে এই শহরটাকে সবার জন্য গড়ে তুলব।’
দখলের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে মেয়র আতিকুল বলেন, ‘অনেকে খাল, মাঠ, রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে রেখেছে। দখল-দূষণ বন্ধ করতে হবে। যাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে, তারা কখনো অবৈধ দখল করতে পারে না। সুন্দর শহর গড়ে তুলতে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘মীরজাফরের বংশধর এখনো বেঁচে রয়েছে, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের সহ্য করতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্ব ও দেশ স্বাধীন করার অবদান স্বীকার করে না। সেজন্য তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানিত হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনা ও স্মৃতি তুলে ধরেন।
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় কাউন্সিলররা।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যসহ মোট ১ হাজার ২০০ জনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা শেষে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংগীতশিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।
সারাবাংলা/আরএফ/এনএস