Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পাকিস্তানি শোষকদের বিনাশ ও মুক্ত সমাজ গঠনে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০০:৩৯

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির গর্ব, আমাদের অহংকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানবমুক্তির সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে কিছু কুলাঙ্গার পাকিস্তানপন্থী ছাড়া বাংলাদেশের আপামর জনতা অংশগ্রহণ করেছিল। স্বশস্ত্র সংগ্রামের মাধমে মুক্ত করেছিল বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) রণেশ দাশগুপ্ত পাঠাগারের উদ্যোগে রাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় মনিজা রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প মুক্তির কথা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আলোচকরা এ সব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

পাঠাগার আন্দেলনের নেতা বিকাশ সাহার সভাপতিত্বে এবং পাঠাগারের সদস্য সচিব গোলাম রাব্বী খান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক এম এম আকাশ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজনীন সুলতানা নীনা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শিপ্রা রায়। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শিশু-কিশোর সংগঠক আবু তাহের বকুল, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গেণ্ডারিয়া শাখার সভাপতি রতন কুমার দাশ, যুবনেতা আনোয়ার হোসেন, সাংস্কৃতিক সংগঠক সুমন কুমার সাহা, ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, ছাত্র নেতা প্রিতম ফকির, প্রিজম ফকির প্রমুখ।

অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা নয়, শোষকের সঙ্গে শোষিত বাঙালির দীর্ঘ সংগ্রামের ফলাফল।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত হলেও আজও বাংলার আপমর জনগণ শোষিত হচ্ছে, শোষণমুক্তির সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ও আগামী প্রজন্ম একসঙ্গে লড়াই করবে।’

বিজ্ঞাপন

নাজনীন সুলতানা নীনা বলেন, ‘ওই সময়ে আজকের মতন নারীরা এতটা স্বাধীন ছিল না, তবে সময়টা ছিল উত্তাল। সেই উত্তাল সময়ে আমার মতন বাংলার নারীরা কেউ অস্ত্র হাতে, কেউ তার সোনার গয়না বিক্রি করে অর্থ দিয়ে বাংলার মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যারা সম্ভ্রম হারিয়েছিল তাদের জানাই কুর্ণিশ। যে স্বাধীনতা আমার অর্জন করেছি সেই স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই হবে।’

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শিপ্রা রায় বলেন, ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ছিল তখন মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণার উৎস। আমরা জীবনবাজী রেখে আমাদের কাজ করেছি। অস্ত্র্র হাতে যুদ্ধ করিনি কিন্তু আমরা যারা কণ্ঠযোদ্ধা ছিলাম তারা দেশের জন্য নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছিলাম, আমরা জানতাম আমরা বিজয়ী হবো। দেশ স্বাধীন হয়েছে এখন দেশের মানুষকে মুক্ত হতে হবে। সেই যুদ্ধেও আমরা বিজয়ী হবো।’

আলোচকরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নসাধ বাস্তবায়নে, অসাম্প্রদায়িকতা ও সৃজনশীলতা বিকাশে অবিরাম সংগ্রাম অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মননা ক্রেস্ট ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৫১তম বার্ষিকীতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সূত্রাপুর থানা শাখা আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৭৫ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। উল্লেখ্য, এ প্রতিযোগিতায় বৃহত্তর সূত্রাপুর এলাকার দশটি স্কুলের নয়শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গেণ্ডারিয়া শাখা সংসদের বন্ধুরা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

সারাবাংলা/একে

১৯৭১ সাল বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর