নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা
২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:২১
ঢাকা: আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে দলে দলে নেতাকর্মীরা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করছেন। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে উদ্যানে আসা শুরু করেন তারা। সারাদেশ থেকে সম্মেলনে আসা নেতাকর্মীরা জানাচ্ছেন নানা প্রত্যাশার কথা।
এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ ও এর আশেপাশের এলাকায় নেতাকর্মীদের পদচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
সম্মেলনে যোগ দিতে নওগাঁ থেকে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা তাইজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন এবারও সফল হবে বলে বিশ্বাস করি। দলের পুরনো নেতৃত্ব বহালের আশা করছি। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পুরনোদের চাই।’
তবে গাজীপুর থেকে আশা রেহানা আক্তার মনিরা বলেন, ‘এই সম্মেলনে সভাপতি ছাড়া অন্য পদগুলোতে নতুন নেতৃত্ব চাই। নতুন নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করবে বলে বিশ্বাস করি।’
ময়মনসিংহ থেকে আসা হেলাল উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সম্মেলন দলের প্রধান শেখ হাসিনার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সফল হবে। তবে আজ সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে খুব মিস করছি।’
কেরানীগঞ্জ থেকে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশিদা আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এই সম্মেলন প্রতিবারের মতো এবারও সফল হবে। আশা করছি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ এই সম্মেলনের মাধ্যমে আরও এগিয়ে যাবে। দলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে এবং কর্মীদের মধ্যে গতিশীলতার বৃদ্ধি পাবে। তবে সভাপতি হিসেবে আবারও শেখ হাসিনাকেই চাই। অন্য পদগুলোতে নতুন নেতৃত্ব চাই।’
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তা তল্লাশির মাধ্যমে আগত নেতা-কর্মীদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বিবেচনায় সাদামাটা আয়োজনে অনুভূতির সম্মেলন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি। সম্মেলনের নতুনত্ব কি? ২০২৪ সালের জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার পাশে রানিংমেট কে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন? আর নতুন মুখ কারা আসছে, কারা বাদ পড়ছে; তা নিয়ে দলীয় ঘরানায় বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা আর আগ্রহ কৌতূহল দেখা দিয়েছে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ (বিশেষ দাওয়াত কার্ডধারী), বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিগণ, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, জাতীয় সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকগণ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) সংলগ্ন অথবা ‘শিখা চিরন্তন’ গেট দিয়ে প্রবেশ করা শুরু করেছে। আর সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাংলা একাডেমি, রমনা কালী মন্দির, টিএসসি ও চারুকলা অনুষদসংলগ্ন গেট দিয়ে প্রবেশ করছে।
সম্মেলন মঞ্চে সভাপতির আসনের সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাযনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদদের ১২০ জন মঞ্চে আসন গ্রহণ করেছেন।
দ্বিতীয় অধিবেশন বিকেল তিনটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে হবে। সর্বমোট ৭ হাজার জন কাউন্সিলর এতে অংশ নেবেন।
পদ্মা সেতুর ওপরে নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট বনাম ৪৪ ফুট মূল মঞ্চে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাদামাটা আয়োজনের সম্মেলনে এ বছর বিদেশিদের দাওয়াত করা হয়নি। কেবলমাত্র বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি দূতাবাস কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল, জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর গণভবনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২২তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস