ওমিক্রনের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ছড়ায় বিএফ.৭ ভ্যারিয়েন্ট
২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:০৪
ঢাকা: সম্প্রতি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের যে ভ্যারিয়েন্টটি বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে তার নাম বিএফ.৭। এটি বিএ.৫ বা ওমিক্রন নামে পরিচিত ভ্যারিয়েন্টটির একটি উপধরন বা সাব ভ্যারিয়েন্ট। ওমিক্রনের বিএ.৫ ধরনের কারণে একজন ব্যক্তি থেকে চারজনের মাঝে সংক্রমণ ছড়ানোর তথ্য জানিয়েছিলেন গবেষকরা। তবে বিএফ.৭ সাব-ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা বিএ.৫’র তুলনায় চার গুণেরও বেশি। এ কারণে বিএফ.৭ সাব-ভ্যারিয়েন্টটিকে বলা হচ্ছে আর-১৮।
অর্থাৎ বিএফ.৭ আক্রান্ত একজন ১৮ জনকে সংক্রমিত করতে পারে। এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটির ইনকিউবিশন পিরিয়ড অনেক কম। অর্থাৎ খুব কম সময়ের মধ্যে মানুষ আক্রান্ত হলেও অনেক দ্রুত সময়ের মাঝে তা অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে। এই ভ্যারিয়েন্টটির উপসর্গ নভেল করোনাভাইরাসের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মতোই।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ‘বিশ্বে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে বাংলাদেশের করণীয়’— শিরোনামে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর।
ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘করোনার নতুন যে ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে বিএফ.৭; সেটি বিএ.৫ এর একটি সাব ভ্যারিয়েন্ট। এটাকে বলা হয় আর ১৮, অর্থাৎ একজন থেকে ১৮ জনে সংক্রমিত করতে পারে। তার মানে অন্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে এটার সংক্রমণ ক্ষমতা চার গুণ বেশি।’
তিনি বলেন, ‘বিএফ.৭ সাব-ভ্যারিয়েন্টটির ভয়ানক দিক হচ্ছে যে ইনকিউবিশন পিরিয়ড অনেক কম। অর্থাৎ খুব কম সময়ের মধ্যে আপনি আক্রান্ত হবেন এবং অনেক বেশি সংখ্যক মানুষকে সংক্রমিত করতে পারবে। এটার উপসর্গ সম্পর্কে যা জানা গেছে; তা অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মতোই।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটির ভয়াবহতা সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত কিছুই জানা যায়নি। তবে এই নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো ভ্যাকসিন না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য এটির ভয়াবহতা অনেক বেশি। তাই যারা এখনও ভ্যাকসিন নেয়নি তাদের দ্রুত নিয়ে নেওয়ার জন্য কারিগরি কমিটি সুপারিশ করেছে।’
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির পরামর্শ তুলে ধরে অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত এসেছে। সেখানে আছে চতুর্থ ডোজ নিয়ে নিতে হবে সম্মুখ সারির ব্যক্তিদের। এর জন্য প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে। যারা কোমরবিডিটির মধ্যে আছেন, তাদের অবশ্যই সুরক্ষা সামগ্রী যেমন মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার, নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন পোর্টে ইতোমধ্যে সিডিসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সব জায়গায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করে আইসোলেশনে নিতে হবে। যেসব দেশে আক্রান্ত সংখ্যা বেশি সেসব দেশ থেকে আগত যাত্রীদের পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর বোতসোয়ানার এক নাগরিকের কোভিড-১৯ নমুনায় প্রথমবারের মতো জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির বিষয়ে জানা যায়। পরবর্তীতে এটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বাংলাদেশেও কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের মাঝে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়। একইভাবে নানা সময়ে এই ভ্যারিয়েন্টের অন্যান্য উপধরনও পাওয়া গেছে।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম