‘বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে তৎপর স্বাধীনতাবিরোধীরা’
২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ২৩:৪৩
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিরা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সর্বদা তৎপর। আমাদের মনে রাখা উচিত- বাংলাদেশ আমাদের দেশ। আমরা দেশের স্বাধীনতা এনেছি।
টানা ১০ম বারের মতো দলের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার একদিন পর রোববার (২৫ ডিসেম্বর) গণভবনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সমাপনী বক্তব্য দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ২৯ বছরে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৯ পর্যন্ত দুই দফায় ক্ষমতায় থাকা সরকারগুলো দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। জনগণও মর্যাদা লাভ করেছে। কারণ ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তিন বার ক্ষমতায় রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।’ জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সমর্থনকারী সাধারণ মানুষই ক্ষমতার সবচেয়ে বড় উৎস। তাই প্রতিটি নেতাকর্মীকে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করার পর জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া দেশকে ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করেছিলেন। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশ থেকে মঙ্গা (দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি) ও দুর্ভিক্ষ চলে যায়। আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়ে ওঠা একটি সংগঠন এবং বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সংগঠনের জন্ম হয়েছে।’ শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাই এটা মাথায় রেখেই দলকে শক্তিশালী করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার দলের বিত্তশালী ব্যক্তিদের নিজ নিজ এলাকায় দলের নিবেদিতপ্রাণ কিন্তু অসচ্ছল কর্মীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগে অনেক অসচ্ছল নেতাকর্মী আছেন, যারা পৈতৃক জমি বিক্রি করেও রাজনীতি করেন। কিন্তু, কখনো কিছু চাননি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইয়ুব খান, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়াসহ অনেকেই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দলে বিপুল সংখ্যক নিবেদিতপ্রাণ কর্মী থাকায় তা করতে পারেননি।’
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে এবং উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কঠোর সংযম বজায় রাখার যাওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খুব প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছি। যা জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’ সরকারপ্রধান বলেন, ‘এখন সরকারের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলা।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইস এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি জনগোষ্ঠী একটি স্মার্ট জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে। সবাই কম্পিউটার এবং অনলাইন ব্যবহারে দক্ষ হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও কৃষিসহ প্রতিটি খাতে স্মার্ট ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে।’
এদিকে, ১০ম বারের মতো দলীয় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় শুরুতেই দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সারাবাংলা/পিটিএম