Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় মহড়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:০১

ঢাকা: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকালে হঠাৎ একটি মোবাইল নম্বর থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে বোমা রয়েছে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এরপর পুরো বিমানবন্দর জুড়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। ফলে মুহূর্তেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় বিমান বন্দরের নিরাপত্তায় থাকা সংশ্লিষ্টদের।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এ গোপন তথ্য আসে। পরে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বিমানবাহিনী ও সেনাবাহিনীর ডগ স্কোয়াডসহ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোর কাছে এ খবর দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

অতঃপর বিভিন্ন সংস্থার প্রায় ৪ শতাধিক সদস্যের অংশগ্রহণে প্রায় ৫০ মিনিটের চেষ্টায় বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজটি থেকে বোমা সদৃশ বস্তুটি উদ্ধার করেন বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা। পরে সেটিকে নিষ্ক্রিয় করেন তারা। এ সময় এয়ারক্রাফটটিকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখেন অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয় করার এ মিশন শুরু হয় সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে, আর শেষ হয় ১১টা ৪২ মিনিটে।

আসলে এটি কোনো সত্য ঘটনা নয়, এটি ছিল একটি মিশন। যেখানে শাহজালাল বিমানবন্দরে এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তারই মহড়া চালানো হয়। প্রতি ২ বছর অন্তর বিমানবন্দরে এ জাতীয় মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। আজ মঙ্গলবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রফতানি কার্গো ভিলেজ টারমার্কের সম্মুখে এ মহড়ার আয়োজন করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

বিজ্ঞাপন

এ মহড়ার নেতৃত্ব দেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম। মহড়াস্থলে অন সিন কমান্ডারের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। ডেপুটি অন সিন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির পরিচালক উইং কমান্ডার শাহেদ আহমেদ খান।

এ বিষয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) এনেক্স-১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিমানবন্দরে হাইজ্যাক, অগ্নি নিরাপত্তা, বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা প্রমাণে প্রতি দুই বছর অন্তর এ ধরনের মহড়া আয়োজন করা হয়। মূলত জরুরি মুহূর্তে বিভিন্ন সংস্থা কত দ্রুত সময়ে আসতে পারে সেটিই প্রমাণ করার লক্ষ্যেই এই মহড়া। অপারেশন ঘোষণার পর বিভিন্ন সংস্থা বিমানবন্দরে অবস্থান নিয়ে নিজ-নিজ দায়িত্ব পালন করে। কিছু জিনিস এয়ারপোর্টের ভেতরে আগে থেকেই থাকে। যেমন ফায়ারের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসক। রানওয়ের পাশে বিমানবাহিনীর ফোর্স ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট আছে।’

কামরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আজকের মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল ‘সময়’ পর্যবেক্ষণ। প্রত্যেক সংস্থার সমন্বয় ঠিক আছে কি না, সেটি দেখা। সংস্থাগুলো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কি না, আমরা সেটি দেখেছি। কার্যক্রমগুলো নিশ্চিত করতে মহড়ার আয়োজন করেছি। মাঝে-মধ্যেই বিমানবন্দরের সক্ষমতা রিভিউ করি। এ ধরনের কার্যক্রম শাহজালাল বিমানবন্দরের জন্য একরকম, সিলেটের জন্য অন্যভাবে প্রযোজ্য।’

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে এভসেক সদস্যরা আইকাও’র দিক নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মহড়া বাস্তবায়ন করেছেন। প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কিছু সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এজন্য দরকার প্রশিক্ষণ ও মহড়া। সিভিল অ্যাভিয়েশনের নির্দেশনা হচ্ছে, প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে মহড়ার মাধ্যমে সক্ষমতা নিশ্চিত করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ মাত্র ৫০ মিনিটের মধ্যে কার্যক্রম শেষ করতে পেরেছি, এটা খুবই ইতিবাচক বিষয়। সবাই সম্মিলিতভাবে দ্রুত কাজ করলে পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করা সম্ভব, সেটি প্রমাণিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৫ সালে বিমানবন্দরে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। জাপান এয়ারলাইন্সের একটা বিমান হাইজ্যাক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে।’

আজকের মহড়ায় হেলিকপ্টার আসার কথা ছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। বিমানবন্দরে স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল ছিল। আগামীতেও সংশ্লিষ্টদের এমন পেশাদারিত্ব নিয়ে মহড়া পরিচালনার আহ্বান করেন বেবিচক চেয়ারম্যান।

সারাবাংলা/এসজে/এনএস

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর