সরকার সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে, মেরামতের বিকল্প নেই : নজরুল

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দুদক-নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সরকার ধ্বংস করে ফেলেছে। সে কারণে এসব মেরামতের বিকল্প কিছু নেই। সে লক্ষ্যেই বিএনপি ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি ঘোষিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন’ শীর্ষক এ পর্যালোচনা সভা আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল বিএনপির মিডিয়া সেল।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তিনি বলেন, যে দেশের প্রধান বিচারপতি সরকারের বিরাগভাজন হলে পদচ্যুত ও দেশছাড়া করা হয় তাহলে সে দেশের বিচার বিভাগ কতোটা স্বাধীন? আমরা এসব বন্ধ করার লক্ষ্যেই রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা করেছি।

জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না সরকার। অথচ তারা নাকি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাহলে জনগণ ভোট দিলো কোথায়? আগের রাতেই ভোটের বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। যা সারাবিশ্বের লোকজন বলেছে। নির্বাচন কমিশনার নিজেও বলেছে। ২০১৪ সালে তো ভোট কেন্দ্রে ভোটারই খুঁজে পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি দলের নেতারা বলছেন- বিএনপি নাকি রাষ্ট্র ভাঙচুর করেছে। এই রূপরেখা নাকি স্ট্যান্টাবাজি? তো রাষ্ট্র কী বস্তু? ধরা যায়? ছোঁয়া যায়? কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে। তেমনি একটি হলো সংবিধান। যাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটা হলো সর্বোচ্চ আইন। এ ধরনের বিষয় নিয়ে রসিকতা করা যায় না।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছি সেই গণতন্ত্রের অবস্থা কি? গণতন্ত্রের প্রধান বাহন হলো নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে বাংলাদেশে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট করতে দেওয়া হয় না। প্রচারণা চালাতে দেয় না। অর্থাৎ ভোট ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘৭২-৭৫ সালে দেশের কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিজেই পল্লী বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু আজকের ক্ষমতাসীনরা কারো অবদান স্বীকার করতে চান না। সে সময় দুই ও তিন শিফটে কারখানা চালু রেখেছিলেন জিয়া। উৎপাদন বৃদ্ধি করেছিলেন তিনি।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিরোধী দলগুলো সভা সমাবেশ করতে পারে না। আজকে একটি প্রধান বিরোধী দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য কারাগারে বন্দি। কোথায় আজকে ন্যায় বিচার? চারবার আবেদনের পরও জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বলছে তারা সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করবে। এটা কি তারা করেছে? মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে কি শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব? রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম থাকবে আবার বলা হবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র করবেন? এসব কি এক সাথে যায়?’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্র মেরামতের যে রূপরেখা দিয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং তাৎপর্যপূর্ণ। বিএনপি সহনশীল রাজনীতি করে। যা শুরু করেছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।’

বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘বিএনপিই প্রথম রাষ্ট্রের দুর্বল বিষয় চিহ্নিত করে মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশকে একটি যুগোপযোগী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যা প্রয়োজন বিএনপি সরকার গঠন করলে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তা করা হবে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ যাচাই-বাছাই করে সংস্কার করা হবে।’

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান ও দপ্তর সম্পাদক ডা. মোঃ ফখরুজ্জামান ফখরুলের পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, ড্যাবের সাবেক সভাপতি একেএম আজিজুল ইসলাম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি এমএ সেলিম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, প্রকৌশলী মোঃ হানিফ, ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক সৈয়দ নুরুল ইসলাম সহ সিনিয়র চিকিৎসক ও বিভিন্ন পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. গাজী আব্দুল হক, অধ্যাপক ডা. সিরাজ উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. আমিনুল হক, অধ্যাপক ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. মোঃ সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. শহিদুল আলম, ডা. মো. শহিদ হাসান, অধ্যাপক ডা. শহিদুর রহমান, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা. শেখ আতিকুল ইসলাম সুজন, ডা. আদনান হাসান মাসুদ, ডা. মো. শামসুল আলম, অধ্যাপক ড. মোঃ মামুনুর রশিদ, ডা. কবির আহমেদ রিয়াজ, বিএনপির মিডিয়া সেলের শায়রুল কবির খান, ডা. আবু নাসের, ডা. মোঃ দিদারুল আলম, ডা. এরশাদ আহসান সোহেল, ডা. বেলাল উদ্দিন মাহমুদ রুমি, ডা. রাকিবুল ইসলাম আকাশ, ডা. সালাহউদ্দিন আল আজাদ সোহাগ, ডা. ফারহান ইমতিয়াজ, ডা. মোতাহের, ডা. লাবিদ রহমান, ডা. সিফাত, ডা. নিয়াজ শহিদ রানা, ডা. রুহুল আমিন খোকন প্রমুখ।

সারাবাংলা/ এজেড

টপ নিউজ মেরামতের বিকল্প নেই : নজরুল সরকার সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে