১১ জানুয়ারি গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৪৫
ঢাকা: সরকার পতনের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১১ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারা দেশের বিভাগীয় শহরে চার ঘণ্টার গণ-অবস্থানের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
ঢাকার গণমিছিলপূর্ব সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সংসদ বিলুপ্ত, সরকারের পদত্যাগ, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে ৩টায় নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ গণমিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শেষ হয় মগবাজার গোলচত্বর গিয়ে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা জনগণের পক্ষে দশ দফা ঘোষণা করেছি। তারই প্রথম কর্মসুচি হলো গণমিছিল। আজকে এসব দফার প্রতি দেশের সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং জোট সমর্থন জানিয়েছে। আমাদের দশ দফার মূল হলো- অবিলম্বে গায়ের জোরের সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি বলেন, আজকে বিএনপির গণমিছিলে জনগণ অংশ নিয়ে আওয়াজ তুলেছে অবিলম্বে এই সরকাররে পদত্যাগ করতে হবে। তাদেরকে আর জনগণ ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তারা দেশে স্বৈরাচার ও বিদেশে হাইব্রিড সরকার নামে পরিচিত। এজন্য তারা গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশালী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। তারা দিনের ভোট রাতেই ডাকাতি করে। তাদের সাথে জনগণ নেই।’
ডক্টর মোশাররফ বলেন, ‘আজকে সরকারি দলের লোকেরা বিদেশে টাকা পাচার করে ব্যাংকগুলো শূন্য করে ফেলেছে। অর্থনীতি ধ্বংসের শেষ সীমানায় চলে গেছে। দেশে বিচারবিভাগ দলীয় করণের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলেছে। তাদের দ্বারা অর্থনীতি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘কোনো স্বৈরাচার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। এরশাদ পারেনি। আইয়ুব খান পারেনি। এই আওয়ামী লীগ সরকারও পারবে না। আমি বলব- এসে দেখে যান বিএনপির সাথে জনগণ আছে কি নেই? আজকে পাড়া মহল্লায় পাহাড় দিয়েও জনগণকে ঘরে আটকে রাখতে পারেননি।’
ডক্টর মোশাররফ বলেন, ‘আমরা আমাদের দফা আদায়ে আরও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করব। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করব। এই স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করতে হলে রাজপথে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আজ আমরা ১ নম্বর সতর্ক বার্তা দিলাম, ১১ জানুয়ারি ২ নম্বর সতর্ক বার্তা দেব।’
গণমিছিলের মূল ট্রাকে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যরিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ও গণমিছিল কর্মসূচির সমন্বয়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন আমান উল্লাহ আমান, এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বেনজীর আহমেদ টিটো, তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, নবী উল্লাহ নবী, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, হাবিবুর রশীদ হাবিব, বেলাল আহমেদ, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, হায়দার আলী লেলিন, খান রবিউল ইসলাম রবি, এ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান সুরুজ, এড. নিপুন রায় চৌধুরী, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক-সদস্য সচিবগণ।
নাইটঙ্গেল মোড়ে ছিলেন বিএনপি নেতা বিলকিস জাহান শিরিন, শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, রেহেনা আক্তার রানু, রাশেদা বেগম হীরা, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, নেওয়াজ হালিমা আরলী, শাম্মি আক্তার, নিলুফার চৌধুরী মনি, মিসেস রাবেয়া সিরাজ, মিসেস জাহানারা বেগম, অর্পণা রায় দাস এবং সাবেক মহিলা এমপি এবং মহিলা দলের নেতারা। সমন্বয় করেন আহমেদ আজম খান এবং হাবিবুর রশিদ হাবিব।
কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে নাইটঙ্গেল মোড়ে ছিলেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান মিনু, জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, আমিনুল হক, নাজিম উদ্দিন আলম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, তাবিথ আউয়াল, রফিক সিকদার, কাজী রফিক, বজলুল বাসিত আঞ্জু। সমন্বয় করেন আমিনুল হক, হায়দার আলী লেলিন।
ঢাকা ব্যাংকের সামনে ছিলেন ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আজিজুল বারী হেলাল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, আকরামুল হাসান, আবু সাঈদ, বালুল করিম চৌধুরী আবেদ, ফজলুর রহমান খোকন এবং ছাত্রদলের নেতারা। সমন্বয় করেন ইকবাল হোসেন শ্যামল।
আনন্দ ভবনের সামনে ছিলেন শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, ওয়ারেস আলী মামুন, একরামুল হক বিপ্লব, হায়দার আলী লেলিন, আব্দুল মতিন, ওবায়দুল হক নাসির, শেখ শামীম, দুলাল হোসেন, মোশাররফ হোসেন এবঙ কৃষক দলের নেতারা। সমন্বয় করেন দুলাল হোসেন।
গণমিছিলে ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা এবং পাশ্ববর্তী জেলা থেকে হাজা হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। তারা বিভিন্ন রংয়ের ক্যাপ, হেডার, টি-শার্ট, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মিছিলে অংশ গ্রহণ করেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগ চেয়ে মিছিল দেন তারা।
সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় নয়াপল্টন এবং এর আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এজেড/আইই