দ্বাদশ টার্গেটে বছরজুড়ে সংগঠনমুখী আওয়ামী লীগ, রাজপথে শক্তির মহড়া
৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৪২
ঢাকা: করোনা মহামারির সংশয় পেরিয়ে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ২০২২ সালে স্যাংশন-পাল্টা স্যাংশনে অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কায় সরকারবিরোধী প্রচার-অপ্রচারের মুখে পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলের সরকার উৎখাতের হুমকি-ধামকির প্রেক্ষিতে রাজপথে সভা-সমাবেশের বিশেষ কর্মসূচিতে পাল্টা সাংগঠনিক শক্তির মহড়া প্রদর্শন দলটি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সংগঠনকে সুসংহত করতে ব্যস্ত সময় পার করে আওয়ামী লীগ। ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে ২২তম জাতীয় সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বছর শেষ করেছে দলটি।
বছরের শুরু থেকেই ঘর গোছাতে শুরু করে আওয়ামী লীগ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে লক্ষ্য করে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে কেন্দ্র থেকে জেলা/মহানগর, উপজেলা /থানা-পর্যায়ের সম্মেলনের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের দিকেও নজর দেয় আওয়ামী লীগ। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বার্তা নিয়ে গণভবন থেকে জনতার দ্বারে— দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে লক্ষ্য করে কয়েকটি সমাবেশে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশবাসীকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আগামী দিনেও নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তৃণমূলকে উজ্জীবিত করার কৌশল ছিল আওয়ামী লীগের।
১০ ডিসেম্বর ঢাকা সমাবেশ করে সরকার উৎখাতের হুমকি-ধামকি দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী শক্তি শোরগোল ফেলে দেয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও রাজপথে পাল্টা সভা-সমাবেশ করে সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করে। রাজনৈতিক অঙ্গনের উত্তেজনা কৌশলে প্রশমিত করতে সক্ষম হয় ক্ষমতাসীন দল।
রাজপথ থেকে সংগঠন, রাজপথ থেকে বিরোধী দল মোকাবেলা তথা সবক্ষেত্রেই বছরজুড়ে আলোচনায় ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মোটাদাগে বছরব্যাপী দলটির কর্মসূচি তুলে ধরা হলো।
উন্নয়নের বার্তা নিয়ে আগামীতেও নৌকার পাশে থাকার আহ্বান
২৪ নভেম্বর যশোর, ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ও ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে মহাসমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। তিন মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি মহাসমাবেশে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নেন। করোনা-পরবর্তী সময়ে যশোরে জনসভার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ঢাকার বাইরে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু হয়। দীর্ঘদিন পর দলের নেত্রীকে সশরীরে পেয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়। এসব সমাবেশ থেকে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট প্রার্থনা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া ১১ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুবর্ণজয়ন্তীর যুব সমাবেশে যুব শক্তির মহড়া প্রদর্শন করা হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বছরজুড়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, চট্টগ্রামে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে’র দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্তি শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে, ১০০টি ব্রিজ ও সড়ক-মহাসড়কের একই দিনে একইসঙ্গে উদ্বোধন, জাপানি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন ছাড়াও মেট্রোরেল উদ্বোধনের সাফল্য ক্ষমতাসীন দল হিসেবে স্বস্তি দিয়েছে আওয়ামী লীগকে।
তৃণমূল চাঙ্গায় মাঠে ছিল আওয়ামী লীগ
২০২০ ও ২০২১ সাল করোনা মহামারির কারণে কোনো ধরনের সম্মেলন, সভা-সমাবেশ করতে পারেনি আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে করোনার প্রাদুর্ভাব হ্রাস পেলে জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এরপর থেকে দল গোছানোর দিকে মনোযোগ দেয় ক্ষমতাসীন দল। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সফর করে বেশ কিছু সম্মেলন, বর্ধিত সভা ও কমিটি ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তৃণমূলের কোন্দল নিরসনে ভূমিকা পালন করেন তারা। ঢাকা, ফরিদপুর, দিনাজপুর, ভোলা, টাঙ্গাইল, জামালপুর, বরগুনা, কুমিল্লা মহানগর, চুয়াডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝিনাইদহ, লক্ষ্মীপুর, পিরোজপুর, কুমিল্লা দক্ষিণ, জামালপুর, নোয়াখালী, কক্সবাজার, মাগুরা, নওগাঁ, নাটোর, মেহেরপুর, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ আরও বেশ কয়েকটি জেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শতাধিক উপজেলা ও বেশ কয়েকটি মহানগরের সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়। তৃণমূলের এসব সম্মেলন ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
ইউনিয়ন পরিষদে বিদ্রোহী দাপট, অস্বস্তিতে আওয়ামী লীগ
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় চলতি বছর। এ নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত না মেনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয় আওয়ামী লীগকে। বিদ্রোহীদের দাপটে নৌকার ভরাডুবি ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ক্ষমতাসীনদের। ২৬ জেলায় চেয়ারম্যান পদ ছাড়াও নারীদের জন্য সংরক্ষিত পদে ১৮ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৬৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন অনেক বিশ্লেষক। যার কারণে ক্ষমতাসীনদেরও অস্বস্তিতে পড়তে হয়।
এই প্রেক্ষিতে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টিকারী, হাইকমান্ডের নির্দেশনা না মানা এবং বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। শৃঙ্খলা ফেরাতে দল থেকে অনেককেই বহিষ্কার করা হয়। বিশৃঙ্খলাকারীদের কোনো দিন পদ-পদবি দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। তবে, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আবার সুর নরম করতে শুরু করে আওয়ামী লীগ। দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া শতাধিক নেতাকর্মীকে ইতোমধ্যে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে। বাকিরাও যদি কৃতকর্ম স্বীকার করে আবেদন করেন, তাহলে তারা ক্ষমা পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার মেয়র প্রার্থীরাসহ অধিকাংশ কাউন্সিলররাই জয়লাভ করে।
সহযোগীদের দিকে নজর ছিল আওয়ামী লীগের
গত ২৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে পুরনোদের বাদ দিয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয় মেহের আফরোজ চুমকি এবং সাধারণ সম্পাদক হন শবনম জাহান শিলা। গত ১৫ ডিসেম্বর যুব মহিলা লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলন মঞ্চ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির পরামর্শক্রমে পরে যুব মহিলা লীগের সভাপতি হিসেবে আলেয়া সারোয়ার ডেইজি এবং সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলির নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা না করে ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে জানানো হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। অবশেষে ২০ ডিসেম্বর রাতে সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের নাম ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। একই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক হেসেবে তানভীর হাসান সৈকতের নাম ঘোষণা করেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাগর আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। রাজীবুল ইসলামকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সজল কুন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
রাজপথে সতর্ক, শক্তিতে কৌশলী ছিল আওয়ামী লীগ
১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চলবে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশে; বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের এমন বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এসবের মধ্যেই ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাইলেও সরকারের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা যেকোনো মাঠে করার কথা বলা হয়। তবে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে অনড় অবস্থানে থাকে বিএনপি। এ নিয়ে বিতর্ক ও আলোচনার মধ্যেই গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে একজনের মৃত্যু এবং অনেকেই আহত হন। এরপর বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির শীর্ষ কয়েকজন নেতাসহ বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। পরদিন বিকেলে সমাবেশের স্থান নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের ফের বৈঠকে হয়। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের করতে চাইলে অনুমতি পায় বিএনপি।
তার আগে বিএনপির সমাবেশ থেকে যেন কোনো ধারণের সহিংসতা ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য আওয়ামী লীগ তার দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দিয়েছিল। বিএনপির সমাবেশের আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথ সভায় কঠোর হুশিয়ারি বার্তা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে রাজধানীসহ সারাদেশের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে পরের দিন গোটা রাজধানীজুড়ে মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থান নেয়।
আগামীর চ্যালেঞ্জ জয়ে আওয়ামী লীগের সম্মেলন
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাদামাটা আয়োজনে বড় ধরনের রদবদল ছাড়াই সাদামাটা চমক দিয়ে আগামী তিন বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করে আওয়ামী লীগ। ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে দলটির ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে টানা দশমবারের মতো সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। হ্যাটট্রিক করে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। নেতৃত্ব নির্বাচনের এখতিয়ারে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঘোষিত কমিটিতে পুরনোদের প্রতিই আস্থা রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বিদায়ী বছর সম্পর্কে বলেন, ‘সংগঠন গোছানোর জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল আমাদের। কারণ করোনার সংকট পেরিয়ে, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন পাল্টা স্যাংশনের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাবের পদধ্বনি শুরু হয়। তারমধ্যে পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করা হয়েছে। সেদিক থেকে বছরটি ছিল সাফল্যের বছর। ২০২২ সালটি ছিল আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্যের মুকুটে একটি অনবদ্য বছর। এই বছর দেশের ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, বিদায়ী বছরে আমাদের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে, কর্ণফুলী টানেলের দক্ষিণ টিউবের নির্মাণ পূর্ত কাজের উদ্বোধন হয়েছে, একই দিনে একসঙ্গে ১০০টি ব্রিজ ও সড়ক-মহাসড়কের উদ্বোধন করা হয়েছে, বিশেষ অর্থনৈতিক জোন চালু করা হয়েছে, মেট্রোরেলের উদ্বোধন হয়েছে। এগুলো তো আমাদের সরকারের অর্জন, যা জনগণের সার্বিক কল্যাণে কাজে লাগবে। আর রাজনৈতিক দল হিসেবে মনে করি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। গঠনতন্ত্র মেনে নির্ধারিত সময়েই আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল হয়েছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৃণমূল সুসংগঠিত করার কাজ করেছি।
সরকারবিরোধী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপি একটি ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা সফল হতে দেয়নি।
সারাবাংলা/এনআর/আইই